1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফেক নিউজ ঠিক করবে শুধু সরকার, বিতর্কের ঝড়

১৯ জানুয়ারি ২০২৩

কোনটা ফেক নিউজ তা কে ঠিক করবে? একা সরকার? নাকি প্রেস কাউন্সিল, এডিটরস গিল্ড-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রায় নিয়ে তা করা হবে? এই নিয়েই ভারতে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

https://p.dw.com/p/4MPaq
ছবি: M. Gann/picture alliance/blickwinkel/McPHOTO

বিতর্কের কারণ, সরকার তথ্যপ্রযুক্তি বিধিতে পরিবর্তন আনছে। তার খসড়ায় বলা হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে বা  ডিজিটাল মিডিয়ায় কোনটা ফেক বা ভুয়া খবর, তা ঠিক করবে একমাত্র প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো বা পিআইবি। পিআইবি হলো তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা সংস্থা, যা কেন্দ্রীয় সরকারের খবরাখবর দেয়া ও প্রচারের দায়িত্বে আছে। তারা ফেক নিউজ ঠিক করা মানে সরকারেরই করা।

এখানেই আপত্তিটা তুলেছে এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়া। তারা বলেছে, সরকারকে প্রস্তাবিত সংশোধন বাতিল করতে হবে। আগে সাংবাদিক সংগঠন, মিডিয়া সংস্থা, ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তারপর ডিজিটাল মিডিয়া নিয়ে নিয়মনীতি তৈরি করতে হবে। একতরফা কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হবে।

একটি বিবৃতিতে এডিটরস গিল্ড বলেছে, ফেক নিউজকোনটা তা ঠিক করার ভার পুরোপুরি সরকারের হাতে থাকতে পারে না। যদি এটা সরকার ঠিক করে, তাহলে তা সেন্সরশিপ জারি করার মতো হবে। তাই সরকারের এই উদ্যোগে গিল্ড খুবই উদ্বিগ্ন।

গিল্ডের বক্তব্য, ইতিমধ্য়েই অনেকগুলি আইন আছে, যা দিয়ে ভুয়া তথ্যের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু আইনে যে পরিবর্তন করা হচ্ছে, তাতে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে দাবিয়ে রাখা সম্ভব হবে। কারণ, খসড়া প্রস্তাবে ফ্য়াক্ট চেক করার পুরো দায়িত্ব পিআইবি এবং অন্য কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে। তাই সরকারের বিরুদ্ধে কিছু লিখলেই তখন তারা ব্যবস্থা নেবে।

ইলেকট্রনিক্স ও আইটি মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এই খসড়া প্রকাশ করেছে। এডিটরস গিল্ড জানিয়েছে, খসড়ায় যা বলা হয়েছে, তাতে এটাই দাঁড়ায়, কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়ে কোনো তথ্য ভুয়া কি না, তা সরকারই বিচার করে জানাবে। এরকম হলে সরকারের কাজের সমালোচনাই করা যাবে না। প্রকাশিত খবর বন্ধ করা, মুছে ফেলা ও পরিবর্তন করার ক্ষমতা সরকারের থাকবে। বিচারবিভাগের হস্তক্ষেপ ছাড়াই তারা এই কাজ করতে পারবে। ফলে ডিজিটল মিডিয়ার উপর সরকারি হস্তক্ষেপ ভয়ংকরভাবে বেড়ে যাবে।

সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া

প্রবীণ সাংবাদিক ও লেখক শুভাশিস মৈত্র ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, মিডিয়া নিজের বিশ্বাসযোগ্যতার জন্যই ফেক নিউজ বেশি করে না। নোটের ভিতর চিপ আছের মতো কিছু খবর করা হয়েছে ঠিকই, তবে তা সংখ্য়ায় কম। আর সরকারের তরফ থেকে বললে, সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

শুভাশিস জানিয়েছেন, ''আমার মনে হয়, সাংবাদিক ও বিশেষজ্ঞদের মতামত বন্ধ করার চেষ্টা হবে। সেক্ষেত্রে মৌলিক অধিকারের উপরে হস্তক্ষেপ করবে কেন্দ্র। তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে বাধ্য। এখন ডিজিটল মিডিয়ায় এই সব মতামতের মাধ্যমেই সরকারের সমালোচনা সবচেয়ে বেশি করা হয়।''

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাংবাদিকের মতে, এই আইন চালু হলে ডিজিটাল মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলাই যাবে না। বললেই তা ফেক নিউজ বলা হবে, তারপর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জিএইচ/এসজি (এনডিটিভি)