‘মহাপরিচালকের গাফিলতিও দায়ী’
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরকে ঘিরে সারা বাংলাদেশ যখন সোচ্চার, যখন এ নিয়ে দেশে চলছে উত্তেজনা, অস্থিরতা তখনও নীরবে এবারের আয়োজন শেষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল একুশে গ্রন্থমেলা৷ দু্র্যোগের ঘনঘটা বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গনে অন্তত দেখা গেছে বলে জানা যায়নি৷ সেই মেলাতেই ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে লাগে আগুন৷ দফায় দফায় আগুন৷ ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে প্রকাশকদের৷ এ নিয়েই কথা হলো পারিজাত প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী শওকত হোসেন লিটুর সঙ্গে৷ সেই রাতের ঘটনা সবিস্তারে বর্ণনা করলেন তরুণ প্রকাশক৷ প্রকাশনা জগতে আগমন ১৯৮৬ সালে, নিজের প্রকাশনার পথ চলা শুরু ১৯৯৯-তে, বইমেলার সঙ্গে পেশাগত সম্পর্কটা অনেক দিনের৷ কিন্তু লিটু মেলায় বইয়ে আগুন দেখলেন এই প্রথম৷ এ অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে এ-ও জানালেন যে ঘটনাটা নাশকতামূলক বলেই তাঁর ধারনা৷
অনেক অনাকাঙ্খিত ঘটনার সঙ্গেই নাশকতার যোগ খোঁজা হয়, অনেক ক্ষেত্রে খোঁজা সমীচিনও৷ আর একুশে মেলার এ ঘটনার পেছনে একটি বিশেষ মহলের হাত থাকতে পারে এমন কথা তো প্রকাশকরাও বলেছেন৷ তাঁদের বক্তব্য সংবাদ মাধ্যমেই এসেছে৷ বইমেলার প্রকাশকরা প্রজন্ম চত্বরের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের পরপরই ঘটনাটা ঘটেছে বলে সন্দহটাকে কেউ অমূলক বলে উড়িয়ে দেবেন তার জো নেই৷
কিন্তু শওকত হোসেন লিটুর কথা থেকে বেরিয়ে এসেছে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের বইমেলার গুরুত্ব বোঝা এবং আগুন লাগার পর সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে অক্ষমতার বিষয়টি৷ লিটু জানিয়েছেন, মেলা প্রাঙ্গনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রয়েছে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা৷ অথচ রাতে ক্যামেরাগুলো রাখা হয় নিষ্ক্রিয় করে৷ সেদিনও তা-ই ছিল৷ একাডেমীর মহাপরিচালক নাকি প্রকাশকদের নিজে বলেছেন, বড় কোনো অঘটন ঘটে যেতে পারে এমন আশঙ্কা নাকি তিনি করছিলেন৷ তা-ই যদি হবে তাহলে সিসি ক্যামেরা কেন বন্ধ থাকে? একবার আগুন লাগার পরও কেন সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে ক্যামেরাগুলো চালিয়ে রাখা হলো না? এসব প্রশ্নের সদুত্তর পাননি বলেই শওকত হোসেন লিটু মনে করেন, এত ব্যাপক ক্ষতির কারণগুলোর মধ্যে,‘‘বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালকের কিছু গাফিলতিও আছে৷''
সাক্ষাৎকার: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: জাহিদুল হক