‘বরফ গলছে, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই’
১১ নভেম্বর ২০০৯এই মন্তব্যের কারণে ভারতসহ বিশ্বের অনেক পরিবেশ বিজ্ঞানীরই কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারতের পরিবেশমন্ত্রী৷
ভারতের পরিবেশ মন্ত্রী জয়রাম রমেশ বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হিমালয়ের বরফ গলে যাচ্ছে, ইন্টারগভার্মেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ এই তথ্যকে অসম্পূর্ণ হিসাবে আখ্যা দিয়েছে৷ তিনি বিজয় কুমার রায়না নামে একজন বিজ্ঞানীর গবেষণার উপর ভিত্তি করে বলেন, হিমালয়ের বরফ গলে যাচ্ছে খুব দ্রুত আইপিসিসির এই মন্তব্য ঠিক নয়৷ এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাল গোর যিনি একজন পরিবেশ কর্মীও তাঁর কথাও সত্য নয়৷ রমেশ হিন্দুস্থান টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বরফ গলছে, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই৷
এদিকে তাঁর এই মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় তুলেছে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা৷ দ্যা এনার্জি এ্যান্ড রিসোর্স ইন্সটিটিউটের ভূতত্ত্ববিদ শ্রেস্থ টায়াল বলছেন, জয়রাম রমেশ যে গবেষণার আলোকে এই মন্তব্য করেছেন তা অসম্পূর্ণ৷ এটি সাধারণ ধারণার উপর নির্ভর করে তৈরি করা হয়েছে৷ কারণ পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়বে আর বরফ গলবেনা এমনটা কখনোই সম্ভব নয়৷
আইপিসিসির সভাপতি রাজেন্দ্র পাচুড়িও পরিবেশ মন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন রাইনার রিপোর্টটির কোন ‘ শক্ত ভিত্তি নেই'৷ আর রমেশ যে মন্তব্য করেছেন তা ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ'৷ তিনি ব্রিট্রেনের গার্ডিয়ান পত্রিকায় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ভূ-উপগ্রহের মাধ্যমে তোলা ছবি থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, বরফ গলছে এবং তা খুবই দ্রুত হারে৷
উল্লেখ্য বিজয় কুমার রাইনা তার গবেষণা সম্পর্কে হিন্দুস্থান টাইমসকে বলেন, হিমালয়ের বরফ উদ্বেগজনক হারে গলছে না৷ আর সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের কোন প্রভাবও দেখা যাচ্ছে না৷ রাইনা আইপিসিসিকে আরো বিস্তারিত গবেষণা করতে বলেন৷
এদিকে আইপিসিসি বলছে হিমালয়ের সব বরফ গলে গেলে একদিন গঙ্গা প্রবাহ শুকিয়ে যাবে৷ যার ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হবে, একশ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ৷ আইপিসিসির এই তথ্যকে সমর্থন জানিয়েছে কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যায়ের সহকারী অধ্যাপক শাকিল রামসো৷ তিনি বলছেন বিশ্ব উষ্ণায়ণের কারণে বরফ গলছে এতে কোন দ্বিমত নেই৷ প্রমাণ হিসাবে তিনি তাঁর গবেষণায় উল্লেখ করেন যে, কাশ্মীরের সবচেয়ে উঁচু হিমবাহ কোলাহাই গত তিন দশকে ২.৬৩ বর্গ কিলোমিটার কমে এসেছে যার কারণ শুধু মাত্র উষ্ণায়ণ৷
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র সিয়াম সারান ইন্ডিয়ান ওয়াল্ড ইকোনমিক ফোরামকে স্পষ্টতই বলে দিয়েছেন, ভারত সরকার কোন অসমাপ্ত বৈজ্ঞানিক গবেষণার উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না৷
প্রতিবেদক: ঝুমুর বারী
সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার