বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বয়কটে মার্কিন খেলোয়াড়রা
২৮ আগস্ট ২০২০জেকব ব্লেকের ওপর বর্ণবাদী পুলিশের সাতটি গুলির প্রতিক্রিয়া পড়ল অ্যামেরিকার খেলার মাঠে। জনপ্রিয় বাস্কেটবল লিগ এনবিএ-র ম্যাচ বুধবার থেকেই হচ্ছে না। মিলওয়াকি বাকস বর্ণবাদের প্রতিবাদে মাঠে নামতে চায়নি। ফলে তাদের প্লে অফ ম্যাচ বাতিল করতে হয়। প্লেয়াররাও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। অন্য দলগুলি একই পথে হাঁটার কথা ভাবছিল। এই অবস্থায় এনবিএ বৃহস্পতিবারের ম্যাচও বাতিল করে।
মেয়েদের বাস্কেটবল লিগ ডাব্লিউএনবিএ-ও তাদের সব ম্যাচ বাতিল করে দেয়। একই সিদ্ধান্ত নেয় ন্যাশনাল হকি লিগ এবং মেজর লিগ বেসবল। তারাও সব ম্যাচ বাতিল করেছে। তবে মেজর লিগ বেসবল জানিয়েছে, তিনটি ম্যাচ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। মেজর লিগ সকার তো পাঁচটি ম্যাচ বাতিল বলে জানিয়ে দিয়েছে।
ন্যাশনাল ফুটবল লিগের প্র্যাকটিস সেশন ছিল বৃহস্পতিবার। সেটাও বাতিল করা হয়েছে। কারণ ব্লেকের ওপর বর্ণবাদী পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনার প্রতিবাদে শুধু কেনোশা নয়, অ্যামেরিকার সব বড় শহরেই বিক্ষোভ হচ্ছে।
ট্রাম্পের সমালোচনা
বর্ণবাদের প্রতিক্রিয়া খেলার মাঠে এ ভাবে পড়ায় বেজায় চটেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এনবিএ অবশ্য জানিয়েছে, তারা সম্ভবত সপ্তাহান্তে আবার ম্যাচ শুরু করবে। তাতেও ট্রাম্পের রাগ যায়নি। তিনি সোজাসাপটা অভিযোগ করেছেন, ওরা তো রাজনৈতিক সংগঠনের মতো কাজ করছে। এটা একেবারেই ভালো কথা নয়। আমি মনে করি, এটা দেশের জন্য, খেলাধুলোর জন্য ভালো নয়। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এনবিএ-এর কড়া সমালোচনা করলেন ট্রাম্প। এই মাসেই তিনি এনবিএ-এর কড়া সমালোচনা করেছিলেন।
প্রথমে ফ্লয়েড ও পরে ব্লেকের ঘটনায় বাস্কেটবল প্লেয়াররা এতটাই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন যে তাঁরা প্রথমে লিগ বয়কটের কথা ভেবেছিলেন। লস এঞ্জেলেসের লেকার্স ও লস এঞ্জেলেস ক্লিপার্স-এর প্লেয়াররা বুধবার আলোচনা করে ঠিক করেন, তাঁরা আর ম্যাচ খেলবেন না। পরে বৃহস্পতিবার আবার সব ক্লাবগুলিকে নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে ঠিক হয়েছে, এতটা চরম সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না। তাঁরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ বার তাঁরা আবার খেলায় ফিরবেন। শুধু ম্যাচ বন্ধ রেখে প্রতিবাদই নয়, বাস্কেটবল তারকারা অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। অ্যামেরিকায় এই বাস্কেটবল প্লেয়াররা খুবই জনপ্রিয়।
টিনএজার অভিযুক্ত
কেনোশায় বিক্ষোভ চলার সময় গুলি চালিয়েছিল ১৭ বছর বয়সী এক টিনএজার। তাঁকে পুলিশ পরে গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর শাস্তি সাধারণত পুরো জীবন জেলবাস। অ্যামেরিকায় সব চেয়ে কড়া ধারায় ওই টিনএজারকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। শুক্রবার মামলার শুনানি শুরু হবে।
তবে এই ঘটনায় পুলিশের প্রবল সমালোচনা শুরু হয়েছে। কারণ, ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, গুলি চালাবার পর টিনএজার দিব্যি হেঁটে রাস্তা পার হয়ে চলে যাচ্ছে। তার পাশ দিয়ে পুলিশের গাড়ি চলে যাচ্ছে। পরে পাশের রাজ্য থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে, কেন ঘটনার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করল না পুলিশ?
জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)