ট্রাম্পের বিরুদ্ধে খেলোয়াড়দের অদ্ভুত প্রতিবাদ
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭কালোদের ওপর পুলিশের নির্যাতন দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক ক্ষত৷ নানা রকম বিদ্বেষমূলক মন্তব্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে থেকেই এই ক্ষত উসকে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও পালটায়নি তার অবস্থান৷
অ্যামেরিকান ফুটবলার কলিন কায়পারনিক বছরখানেক আগে শুরু করেন এই আন্দোলন৷ কিন্তু তা চরম রূপ নিয়েছে গত সপ্তাহে৷
ঘটনার শুরু বাস্কেটবল টুর্নামেন্ট -এনবিএ চ্যাম্পিয়ন গোল্ডেন স্টেট ওয়ারিয়র্স-এর হোয়াইট হাউসে যাওয়া-না যাওয়া নিয়ে৷ বিভিন্ন জাতীয় টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড়রা ঐতিহ্যগতভাবেই প্রেসিডেন্টের সাথে ডিনারে হোয়াইট হাউসে দাওয়াত পেয়ে থাকেন৷ এই ধারা চালু হয় ১৮৬৫ সালে৷
কিন্তু ওয়ারিয়র্সের খেলোয়াড় স্টিফেন কারি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, দল হিসেবে ওয়ারিয়র্স দাওয়াত পেলেও তিনি ব্যক্তি হিসেবে হোয়াইট হাউসে যাবেন না৷
এরপর স্বভাবগতভাবেই ফুঁসে ওঠেন ট্রাম্প৷ এক টুইটে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ পাওয়াকে ‘সম্মানের’ বিষয় উল্লেখ করে আমন্ত্রণ বাতিল করার ঘোষণাও দেন তিনি৷ তবে শুধু কারির আমন্ত্রণ বাতিল হলো, নাকি পুরো টিম ওয়ারিয়র্সের, তা অবশ্য পরিষ্কার করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷
খেলোয়াড়রাও অবশ্য তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়ে দিয়েছেন, হোয়াইট হাউসে যাওয়া না যাওয়ায় থোড়াই আসে যায় তাঁদের৷
শুধু টুইট করেই থেমে থাকেননি ট্রাম্প৷ এক সমাবেশে বক্তব্যে কায়পারনিক ও কারির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘‘যেসব এনএফএল খেলোয়াড় জাতীয় পতাকাকে অসম্মান করে দলের মালিকের উচিত তাদের বহিষ্কার করা৷’’ এসব খেলোয়াড়কে ‘কুকুরের বাচ্চা’ বলেও আখ্যা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷
এরপর থেকেই তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে খেলার মাঠে৷ প্রায় প্রতিটি ফুটলবল ম্যাচের আগেই জাতীয় সংগীতের সময় হাঁটুগেড়ে বসে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অনেক খেলোয়াড়৷ ট্রাম্পের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কাউকে বহিষ্কার তো দূরের কথা, বরং দলের মালিকরা বিষয়টি ছেড়ে দিয়েছেন খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর৷ কোনো কোনো দলের খেলোয়াড়েরা তো জাতীয় সংগীতের সময় মাঠেই আসছেন না৷
একসময় ট্রাম্পকে বন্ধু পরিচয় দেয়া প্যাট্রিয়ট দলের কোয়ার্টারব্যাক টম ব্র্যাডিও জানিয়েছেন প্রতিবাদ৷ বলছেন ট্রাম্পের এমন বক্তব্য খেলোয়াড়দের ‘বিভক্ত’ করে দিচ্ছে৷ সম্প্রতি এক খেলায় ব্র্যাডিও দাঁড়িয়েছেন প্রতিবাদীদের কাতারে, হাতে হাত রেখে৷
ধীরে ধীরে এনএফএল ছাড়িয়ে এই উত্তাপ ছড়িয়েছে বাস্কেটবল ও বেসবলের মাঠেও৷ ‘খেলার সাথে রাজনীতি মেশানো’ ঠিক হবে কি না, সে প্রশ্ন থেকে অনেক দূরে সরে এসেছে এ প্রতিবাদ৷
এডিকে/এসিবি