জার্মানির অভিবাসীরা
১ জুন ২০১৩প্রথা মতো চ্যান্সেলরের দপ্তরে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়৷ চ্যান্সেলর স্বয়ং তার উদ্বোধন করেন৷ ফেডারাল সরকার, বিভিন্ন রাজ্য সরকার, পৌর প্রশাসন, শিল্প সমিতি ও অভিবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন৷
গত মঙ্গলবার সম্মেলনের উদ্বোধনে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল তাঁর ভাষণে বলেন, অভিবাসীদের প্রতি আরো বেশি মুক্ত মানসিকতার প্রয়োজন৷ বহু অভিবাসীর মনেই কালে এই প্রশ্ন জাগে: সমাজে সম্পৃক্ত হওয়া? কবে আমরা অবশেষে এই সমাজের অংশ হয়ে উঠব? ম্যার্কেলের ভাষায়: ‘‘‘আমি আর কি করব? জার্মান শিখেছি৷ আমার জার্মান পাসপোর্ট আছে৷ আর কি করতে হবে, যা-তে আমাকে সমাজে সম্পৃক্ত বলে গণ্য করা হয়?''
ম্যার্কেল স্পষ্ট ভাষায় বলেন, জার্মানি একটি ‘‘সম্পৃক্ততার দেশ'' হয়ে উঠতে চায়৷ সে পথে প্রথম পদক্ষেপ হবে শ্রমবাজারে ‘‘সম্পৃক্ততা'', যা কিনা এই ষষ্ঠ সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল৷ বিষয়টির পিছনে একটি সুবিশাল সমস্যা লুকিয়ে রয়েছে৷ জার্মানিতে এক কোটি ষাট লক্ষ অভিবাসীর বাস৷ কিন্তু চাকুরির বাজারে তাদের সুযোগ বহুক্ষেত্রেই জার্মান বংশোদ্ভূতদের চেয়ে কম৷ অভিবাসী-বহিরাগতদের মধ্যে বেকারত্বের পরিমাণও বেশি৷ কর্মসংস্থান কার্যালয়ে বেকার ভাতার জন্য যাদের নাম নথিভুক্ত করা আছে, তাদের মধ্যে ৩৫ শতাংশের অভিবাসী-বহিরাগত পটভূমি আছে৷
জার্মানির একটি সমস্যা হলো, অতীতে যে ধরনের অভিবাসন ঘটেছে, তার সঙ্গে ভবিষ্যতে যে ধরনের অভিবাসনের প্রয়োজন পড়বে অথবা ইতিমধ্যেই পড়ছে, তার কোনো সম্পর্ক নেই৷ যে কারণে পেশাগত যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মসন্ধানীদের জার্মানিতে আসার, কাজ ও বসবাস করার প্রক্রিয়া আরো সহজ করার ডাক উঠেছে৷ কিন্তু জার্মানিতে বিদেশি-বহিরাগতদের যে দ্বিতীয়-তৃতীয় প্রজন্ম বড় হয়ে উঠেছে এবং উঠছে, তাদের ‘‘সম্পৃক্ত'' করার সমস্যাটা থেকেই যাবে৷
সেই সমস্যা দূর করার শ্রেষ্ঠ পন্থা ‘‘স্বাগত জানানোর সংস্কৃতি'' তো বটেই, কিন্তু সেই সঙ্গে যারা এ দেশেরই মাটিতে জন্মেছে, মানুষ হয়েছে, তাদের আপন করে নেওয়ার সংস্কৃতিও অবহেলা করা উচিত নয়৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ)