জলবায়ু সম্মেলন
১৮ মে ২০১২সম্মেলনে পরিবেশ ছাড়াও বাংলাদেশে জ্বালানির উৎস, প্রকৃতি ও সম্ভাবনা নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা তুলে ধরেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বিশেষজ্ঞবৃন্দ৷ বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট নেটওয়ার্ক, জার্মানি ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ক্লাইমেট চেঞ্জ ইফেক্টস অ্যান্ড এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অব বাংলাদেশ - আইসিসিইবি' নামের দুই দিন ব্যাপী এই সম্মেলন আয়োজন করে৷
জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেটিওরোলোজি বিভাগে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্টদূত মসুদ মান্নান৷ সভাপতিত্ব করেন জার্মানির হাইডেলব্যার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া ইন্সটিটিউট'এর অধ্যাপক ড. ভোল্ফগাঙ্গ-পেটার সিংগেল৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে গবেষণার নানা সম্ভাবনাময় দিক তুলে ধরেন বন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেটিওরোলোজিক্যাল বিভাগের উচ্চতর গবেষক ড. ক্রিস্টিয়ান ওলভাইন৷ ‘আইসিসিইবি-২০১২' এর লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম সম্মেলনের ইতিবাচক ধারাবাহিকতার কথা তুলে ধরেন ‘আইসিসিইবি-২০১২'-এর সাধারণ সম্পাদক ড. মাজহারুল এম ইসলাম রানা এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইনজা থিয়েলে আইচ৷
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মান্যবর রাষ্ট্রদূত মসুদ মান্নান বলেন, ‘‘অপার সম্ভাবনার দেশ বাংলাদেশ৷ ইতিমধ্যে কৃষি, শিল্প, বিজ্ঞানসহ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতিভাবান জনগোষ্ঠী কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে৷ কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে হুমকির দিকে ঠেলে দিয়েছে৷ এর হাত থেকে বাঁচতে করণীয় বিষয়ে এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে৷''
স্বাগত বক্তৃতায় ড. মাজহারুল বলেন, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে ভূ-প্রাকৃতিক পরিবর্তন হচ্ছে, যেসব স্বাস্থ্য ঝুঁকি, খাদ্য ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে এবং পরিবর্তিত পরিবেশে কী ধরণের উন্নয়ন কৌশল বাংলাদেশে গ্রহণ করা উচিত সেসব বিষয় উঠে আসছে এই সম্মেলনে উপস্থাপিত গবেষণা প্রবন্ধে৷''
এছাড়া এবারের সম্মেলনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশের জ্বালানি ইস্যুর উপর৷ বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সমস্যা মেটাতে ফসিল অর্থাৎ কয়লা ও গ্যাস থেকে উৎপন্ন জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে কীভাবে সৌর শক্তি, বায়ু চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রযুক্তি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি উৎপাদনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে৷
দুই দিনের বন সম্মেলনে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যৌথ যে সব নদী রয়েছে সেগুলোতে বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশে কী ধরণের ক্ষতি হবে এ বিষয়েও গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়৷
সম্মেলনের প্রথম দিন ‘ক্ষুদ্র ঋণ এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব' বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন৷ ‘বাংলাদেশের বড় বড় নদীগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব' বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ইনজা থিলে আইচ৷ ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নগর অবকাঠামো - লক্ষিত জনগোষ্ঠীর আচরণ' শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সুজিত কুমার সরকার৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ