কমছে বন, বাড়ছে উদ্বেগ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩মূল সমস্যাটা দৃশ্যত এই যে, বাংলাদেশ সরকার এবং বিভিন্ন সরকারি মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠান বনানি সংরক্ষণের যে নীতি নিয়েছে, সেগুলির বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিরাট ঘাটতি রয়েছে৷ উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এটা সাধারণভাবে গুড গভরন্যান্সের সমস্যা৷ কিন্তু জলবায়ু ও পরিবেশ থেকে শুরু বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, এমনকি কৃষি ও খাদ্যসংস্থান অবধি, সব কিছুর উপর বনানি ধ্বংসের যে প্রভাব পড়ছে, পড়বে এবং পড়তে পারে, তার পরিপ্রেক্ষিতে বনানি সংরক্ষণের জন্য এখনই কিছু করা দরকার৷
কেন? বাংলাদেশে ফরেস্ট কভার অর্থাৎ রাজ্যাঞ্চলের তুলনায় বনানির অনুপাত বিশ্বের নিম্নতমগুলির মধ্যে পড়ে৷ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংগঠন এফএও-র ২০০৯ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের মাত্র ৬ দশমিক ৭ শতাংশ জমি বনজঙ্গলে ঢাকা৷ ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, পরিবেশ সংক্রান্ত আইনকানুনের দুর্বলতা এবং তা কার্যকরী করায় গড়িমসির কারণে বছরে দু'হাজার হেক্টার বনানি বিলুপ্ত হচ্ছে৷
সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট কিংবা গাজিপুরের শালবন, সবই বিপন্ন৷ অথচ ঠিক তার ফলেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ইতিমধ্যেই মারাত্মক হয়ে পড়েছে – তা সে আইলা ঘূর্ণিঝড়ই হোক আর উপকূলীয় প্লাবনই হোক৷ অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি, এমনকি নিয়মিত বাৎসরিক বন্যার সঙ্গেও বনানি নিধনের সংযোগ আছে৷ কাজেই সব মিলিয়ে দেশের কৃষি উৎপাদন প্রভাবিত হচ্ছে, যা কালে খাদ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে৷
বনানি ধ্বংসের একটি কারণ জনসংখ্যার চাপ, এবং তা শুধু কৃষিজমির খোঁজেই নয়৷ বিশেষ করে সংরক্ষিত বন এলাকাগুলির কাছের মানুষেরা প্রথাগতভাবে অরণ্য থেকে ‘নন-টিম্বার ফরেস্ট প্রোডাক্ট', বা কাঠ ছাড়া জঙ্গলের অন্যান্য পণ্য থেকে জীবনধারণ করে থাকেন৷ কাজেই সর্বাধুনিক চিন্তাধারা হল, স্থানীয় মানুষজনকে বৈধভাবে এনটিএফটি সংগ্রহের অধিকার দেওয়া৷