বাংলাদেশে গ্রেপ্তার কমপক্ষে ১০,০০০
৫ জুন ২০০৮বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান নুর মোহাম্মদ এই প্রসঙ্গে ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, সারাদেশে অপরাধ কর্মকান্ড কমাতে মাসব্যাপী অভিযানের একটি অংশ এই ধরপাকড়৷ আমরা এই মুহুর্তে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা দ্রুত এগোচ্ছি৷
তবে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বাধা সৃষ্টির জন্য বর্তমান সরকার এই ধরপাকড় চালাচ্ছে বলে দাবি করছে রাজনৈতিক দলগুলো৷ এই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, পৌরসভার চেয়ারম্যান, আমাদের সংগঠনের কর্মকর্তা, তাদেরকে গ্রেপ্তার করছে৷ অবশ্যই এটা রাজনৈতিক৷
তোফায়েল আহমেদ দাবি করেছেন, সরকারের সঙ্গে সংলাপে অংশ না নেয়ায় দলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানি করতে এই ধরপাকড়৷ তিনি বলেন, সারাদেশের নেতাকর্মীরা জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া সংলাপে না যাওয়া এবং তাকে বাদ দিয়ে নির্বাচন বাস্তবসম্মত হবে না ইত্যাদি বক্তব্য দেয়ার পরেই কাজটি শুরু হয়েছে৷ সুতরাং সকলেই মনে করে যে, রাজনৈতিক কারণেই তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
অপর রাজনৈতিক দল বিএনপি'র মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, সহস্রাধিক নিরপরাধ বিএনপি নেতা ও সমর্থকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তিনি আরো বলেন, এই ধরপাকড়ের পর অনেক রাজনীতিবিদ গা ঢাকা দিয়েছেন৷
তবে রাজনীতিবিদদের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন পুলিশ প্রধান নুর মোহাম্মদ৷ বার্তাসংস্থা এএফএপিকে তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, আমরা শুধুমাত্র তাদেরকেই গ্রেপ্তার করছি৷
এদিকে বাংলাদেশ সরকারের এই ঢালাও ধরপাকড়ের ফলে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের উর্দ্ধতন গবেষক মিনাক্ষী গাঙ্গুলী৷
ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জরুরী ক্ষমতা আইন নিয়ে অনেক সমালোচনা করেছে৷ এই জরুরী ক্ষমতা আইনের মধ্যে জামিন অনুমোদিত না, ফ্রি ট্রায়াল যেটা হয়, যেটার মধ্যে লোকেরা দেখতে পারে যখন কোর্টে কোন প্রসিডিং হয় সেটাও অনুমোদিত না৷ আর এই জন্য এই যে দশ বারো হাজার লোককে ওরা আবার গ্রেপ্তার করছে, এদেরকে যদি জরুরী ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার করা হয় তাহলে আমরা বলবো যে, এটা মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী৷
গ্রেপ্তারকৃতদের আইনী সহায়তা দেবার বিষয়ে মিনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেন, আমরা এটা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিশ্চয়ই কথা বলবো৷
স্থানীয় সুত্রগুলো বলছে মঙ্গল ও বুধবার মিলিয়ে ১,৭০০ জনের বেশি লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ ২৮শে মে রাত থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তারের সংখ্যা কমপক্ষে ১০,০০০৷ এই ধরপাকড় কতদিন অব্যাহত থাকবে সে প্রসঙ্গে কোন কিছু জানায়নি বাংলাদেশ সরকার৷