বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের আশঙ্কা
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪আল কায়েদার বর্তমান নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরির নাম ও ছবিসহ প্রচারিত ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের ‘ইসলাম বিরোধীদের' বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বানে উদ্বিগ্ন নিরাপাত্তা বিশ্লেষক এবং মানবাধিকার নেতারা৷ নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রশীদ (অব.) ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আল কায়েদা একটি মতবাদ৷ আর এই জঙ্গি মতবাদের অনুসারী বাংলাদেশে যে নেই তা বলা যাবেনা৷''
তিনি বলেন, ‘‘আল কায়েদা সরাসরি বাংলাদেশে কাজ না করলেও তাদের আদশের্র অনুসারী জঙ্গি সংগঠন বাংলাদেশে আছে৷ আর আয়মান আল-জাওয়াহিরির আহ্বানে তারা যে উজ্জ্বীবিত হবেন তা বলাই যায়৷ এজন্য সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে৷''
তবে তিনি মনে করেন, ‘‘জনতার প্রতিরোধের যে আহ্বান জানান হয়েছে তা কাজে আসবে না৷ কারণ এদের সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষ এখন বেশ সচেতন৷ তবে তাদের অনুসারীরা সহিংসতা বাড়াতে পারে৷''
এদিকে, মানবাধিকার নেতা নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আইনের শাসন না থাকলে দেশে অনাচার, অবিচার এবং সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠনের উদ্ভব ঘটে প্রতিরোধের নামে৷''
তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে এখন যে পরিস্থিতি চলছে তা অব্যাহত থাকলে এখানে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটার আশঙ্কা আছে৷ আল কয়েদার মত জঙ্গি সংগঠন এর সুযোগ নেবে৷''
নূর খান বলেন, ‘‘সমাজ দুইভাগে ভাগ হয়ে গেলে মধ্যবর্তী নিরপেক্ষ মানুষের প্রয়োজন হয়৷ দল নিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় বাংলাদেশে শুধু জঙ্গিবাদের উত্থান নয়, আরো অনেক সঙ্কট দেখা দিতে পারে৷''
অন্যদিকে ইসলামী ঐক্যজোটোর সাবেক নেতা মাওলানা মুহীউদ্দিন খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আল কায়েদা যে আহ্বান জানিয়েছে তার সঙ্গে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই৷ বাংলাদেশের ইসলাম প্রিয় আলেমরা সন্ত্রাস পছন্দ করেন না৷ ইসলাম শান্তির ধর্ম৷'' ইসলামের নামে কোন সন্ত্রাস এদেশের মুসলমানরা গ্রহণ করে বলে মনে করেন না তিনি৷
আল কায়েদার ভিডিও বার্তার তদন্ত হচ্ছে
বাংলাদেশের ‘ইসলাম বিরোধীদের' প্রতিরোধে আল কায়েদার বর্তমান নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরির নাম ও ছবিসহ প্রচারিত ভিডিও বার্তা'র তদন্ত হচ্ছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন ব়্যাবের উপ-মহাপরিচালক কর্ণেল জিয়াউল আহসান৷
তিনি শনিবার রাতে জানান, ভিডিও বার্তাটি তারা সংগ্রহ করেছেন৷ এর উত্স এবং অন্যান্য দিক তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ এই আহ্বানের পেছনে আরো কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ তাঁর মতে, ধারাবাহিক অভিযানের ফলে বাংলাদেশের শীর্ষ জঙ্গিরা এখন কারাগারে৷ তাই জঙ্গি তত্পরতা আর আগের মত নেই৷
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে আল কায়েদার উপস্থিতি বা তাদের সঙ্গে যুক্ত কোনো জঙ্গি সংগঠনের উপস্থিতির তথ্য তাদের কাছে নেই৷