বাংলাদেশে পাম চাষ
ভোজ্য তেল হিসেবে পাম ওয়েলের ব্যবহার বাংলাদেশে দিন দিন বাড়ছে৷ এই তেলের বেশির ভাগই আমদানি করা হয়৷ তবে কয়েক বছর ধরে দেশেই পাম চাষ শুরু হয়েছে৷
পাম তেল
পাম গাছের ফল প্রক্রিয়াজাত করে যে তেল পাওয়া যায় তাকে পাম তেল বলে৷ পাম ফলের মাংসল অংশ ও বীজ থেকে তেল পাওয়া যায়৷ মাংসল অংশ থেকে যে তেল পাওয়া যায়, তার নাম পাম তেল৷ আর বীজ বা ক্যার্নেল থেকে যে তেল পাওয়া যায়, তার নাম পাম ক্যার্নেল তেল৷
বাংলাদেশে প্রথম
জাতীয় ই-তথ্যকোষে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে প্রথম মালয়েশিয়া থেকে পাম বীজ আনা হয়েছিল৷ তবে জোরেশোরে পাম চাষ শুরু হয় গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল থেকে৷ সেসময় সরকারি পর্যায় থেকে পাম চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হয়৷ কয়েকটি সংস্থাও এক্ষেত্রে প্রচারণা শুরু করেছিল৷
সমস্যা
প্রচারণায় উৎসাহী হয়ে অনেক কৃষক ঋণ নিয়ে পাম চাষ শুরু করেছিলেন৷ তবে তিন-চার বছর পর গাছে ফল আসলে, তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন তাঁরা৷ কেননা এই ফল থেকে কীভাবে তেল উৎপাদন করতে হবে সে বিষয়ে ততটা জানা ছিল না কৃষকদের৷
আশার কথা
মেহেরপুরের কয়েকজন যুবক নিজেদের উদ্যোগে পাম ফল থেকে তেল উৎপাদনের জন্য একটি মেশিন তৈরি করেছেন বলে জানা গেছে৷
মেশিন ছাড়া তেল
গাছ থেকে পরিপক্ক ফল নামিয়ে পাত্রের মধ্যে পানিসহ ফুটিয়ে সেগুলোকে নরম করতে হবে৷ এরপর নরম ফলগুলো হাতে চেপে রস বের করতে হবে৷ তারপর পানি মিশ্রিত এ রসকে একটি পাত্রে রেখে চুলায় কিছুক্ষণ তাপ দিলে রসে বিদ্যমান পানি বাষ্পাকারে বের হয়ে যাবে এবং পাত্রের মধ্যে পাম তেল জমা থাকবে৷
দুটি পাম গাছই যথেষ্ট
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি পরিবারে দুটি পামঅয়েল গাছ চাষ করলে ঐ পরিবারের সারা বছরের ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব৷ এছাড়া প্রতিটি পরিবার যদি পাম চাষে এগিয়ে আসে তাহলে ভবিষ্যতে হয়তো বাংলাদেশকে তেল আমদানি করতে হবে না বলেও মনে করেন তাঁরা৷
অর্থ সাশ্রয়
বাংলাদেশে ভোজ্যতেল আমদানি খাতে প্রতি বছর ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়৷ যে তেল আমদানি করা হয় তার ৬০ শতাংশই পাম তেল৷ তাই পাম চাষ বাড়ানো গেলে এই অর্থের একটা বড় অংশ সাশ্রয় করা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷ কারণ বাংলাদেশের জমি পাম চাষের বেশ উপযোগী৷