বাংলাদেশে বন্যায় ৭১ জনের মৃত্যু, পানিবাহিত রোগের আশঙ্কা
৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪অবিরাম বৃষ্টি এবং উজান থেকে আসা ঢলে গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশে বন্যায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে৷ সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷
বন্যাকবলিত ১১ জেলায় পাঁচ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি পরিবার এখনও বিপর্যস্ত এবং খাদ্য, বিশুদ্ধ জল, ওষুধ এবং শুকনো পোশাকের অভাব দেখা দিয়েছে৷ সেনা, বিমান, নৌ এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী ত্রাণ তৎপরতায় সহায়তা করেছে৷ পাঁচ শতাধিক মেডিকেল টিম চিকিৎসা প্রদানে সহায়তা করছে৷
বন্যার জল নেমে যেতে শুরু করার পর কর্তৃপক্ষ এখন পানিবাহিত রোগের বিস্তার রোধ করার দিকে মনোনিবেশ করছে৷
স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর জানিয়েছে যে ডায়রিয়া, ত্বকে সংক্রমণ এবং সাপের কামড়ে ২৪ ঘণ্টায় প্রায় পাঁচ হাজার মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ মঙ্গলবারও রাজধানী ঢাকায় ভারি বর্ষণে অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে৷ কোথাও কোথাও সড়ক নিমজ্জিত হয়েছে হাঁটুজল বা কোমরজলে৷ জলাবদ্ধতার কারণে দেখা দিয়েছে ব্যাপক যানজট৷
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে বন্যায় ফসলের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকায়৷ কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক মূল্যায়ন বলছে, ১৪ লাখেরও বেশি কৃষক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷
বিশ্বব্যাংক ইনস্টিটিউটের ২০১৫ সালের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে ৩৫ লাখ মানুষ প্রতি বছর বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই ঝুঁকির পরিমাণ আরো বেড়েছে বলে মনে করা হয়৷
জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) জানিয়েছে, বাংলাদেশে তিন দশকের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় ঝুঁকিতে রয়েছে ২০ লাখ শিশু৷ ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহের জন্য সাড়ে তিন কোটি ডলার সংগ্রহের জরুরি আবেদন জানিয়েছে ইউনিসেফ৷
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ এমা ব্রিগহ্যাম বলেছেন, ‘‘বছরের পর বছর ধরে বন্যা, তাপদাহ এবং ঘূর্ণিঝড়ে বাংলাদেশের লক্ষাধিক শিশুর জীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে৷ জলবায়ু পরিবর্তন শিশুদের জীবনকে স্পষ্টভাবেই পরিবর্তন করে দিচ্ছে৷''
এডিকে/জেডএইচ (রয়টার্স)