বাড়ছে জার্মান সাংসদের বেতন
১৬ মার্চ ২০১৪জিনিস-পত্রের দাম বাড়ে, কিন্তু বেতন বা মজুরি সেই অনুযায়ী বাড়ে না৷ এমন অভিযোগ কার না নেই! মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে রফা হলে বেতন অল্পস্বল্প বাড়ে বটে৷ তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়৷ কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের আয় কে বেঁধে দেবে? সেটা না হয় তাদের রাজনৈতিক দল স্থির করে দিল৷ কিন্তু মন্ত্রী বা সংসদ সদস্যদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আলাদা৷ জার্মানির সংবিধান অনুযায়ী সাংসদরা নিজেরাই নিজেদের বেতন স্থির করেন৷ সরকারি বা রাজনৈতিক বিষয়ে যতই বাকবিতণ্ডা হোক না কেন, নিজেদের স্বার্থের প্রশ্নে সাংসদদের মধ্যে মোটামুটি ঐকমত্য দেখা যায়৷ এবারও তাই হলো৷ জার্মান সংসদের নিম্ন কক্ষের সদস্যদের বেতন এক লাফে বেশ কিছুটা বেড়ে গেল৷ তবে একইসঙ্গে দুর্নীতির আশ্রয় নিলে তাঁদের শাস্তির মেয়াদ আরও বাড়িয়ে দেওয়া হলো৷
২০১৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে বুন্ডেসটাগ-এর সদস্যদের মাসিক বেতন দাঁড়াচ্ছে ৯,০৮২ ইউরো৷ ২০১৩ সালেই বেতন বাড়িয়ে ৮,২৫২ ইউরো করা হয়েছিল৷ কিন্তু বার বার নিজেরাই নিজেদের বেতন এতটা বাড়ালে বিষয়টি একটু দৃষ্টিকটু হয়ে ওঠে৷ কারণ জার্মানির সাধারণ কর্মী বা শ্রমিকদের বেতন বা মজুরি তো আর এই হারে বাড়ে না! তাই ২০১৬ সাল থেকে এই সিদ্ধান্ত ‘স্বয়ংক্রিয়' করে তোলা হবে৷ অর্থাৎ এতদিন বিচ্ছিন্নভাবে বেতন বাড়ানো হতো৷ ভবিষ্যতে ফেডারেল পর্যায়ে বিচারপতিদের বেতনের সঙ্গে তা বেঁধে দেওয়া হবে৷ তারপর আর আলাদা করে সাংসদদের বেতন বাড়ানোর প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে৷
যথেষ্ট অর্থবল থাকলে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে দুর্নীতির প্রবণতাও কমে যাওয়া উচিত৷ সেইসঙ্গে শাস্তির ভয়ও কাজ করে৷ জার্মান সাংসদদের বেতন বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির শাস্তিও আরও কড়া করা হলো৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রায় এক দশক ধরে জাতিসংঘের দুর্নীতি বিরোধী কনভেনশন অনুমোদন করেনি জার্মানি৷ কারণ এর অন্যতম বড় পূর্বশর্তই হলো জনপ্রতিনিধিদের জন্য কড়া আইন৷ অবশেষে জার্মানির রাজনৈতিক শ্রেণির টনক নড়েছে৷ ঘুস নিলে বা দিলে এবার সাংসদদের পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে৷ শুধু সংসদ নয়, রাজ্য বিধানসভার সদস্যদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে৷
তবে লজ্জার বিষয় হলো, বিশ্বের প্রায় ১৬৫টি দেশই জাতিসংঘের দুর্নীতি বিরোধী কনভেনশন অনুমোদন করে ফেলেছে৷ শুধু সিরিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশই এখনো সেই পথে এগোয়নি৷ জার্মানিও এতকাল এই তালিকায় ছিল৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)