বার্লিন হামলায় আইএস-এর ‘দায় স্বীকার’
২০ ডিসেম্বর ২০১৬আইএস-এর মুখপাত্র আমাক নিউজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, আন্তর্জাতিক জোটভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর হামলার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ‘ইসলামিক স্টেটের একজন সেনা’ বার্লিনে হামলা চালিয়েছে৷
এর আগে বার্লিনের পুলিশ প্রধান ক্লাউস কান্ট মঙ্গলবার একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন যে, ধৃত ব্যক্তি ট্রাকটির চালক ছিল কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷ আসল আক্রমণকারী এখনও ফেরারি ও তার কাছে অস্ত্র আছে, বলে অপর এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন৷ বার্লিনের একটি বড়দিনের বাজারে ভিড়ের মধ্যে ট্রাক চালিয়ে অন্তত ১২ জন মানুষের প্রাণ নিয়েছে যে ব্যক্তি, বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল, ঘটনাস্থলের কাছে গ্রেপ্তারকৃত সেই ২৩ বছর বয়সি সম্ভাব্য পাকিস্তানি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী দৃশ্যত আততায়ী নয়৷ যে কারণে পুলিশ বার্লিনবাসীকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলেছে ও নববর্ষের জন্য নিরাপত্তা নতুন করে বিবেচনা করা হচ্ছে, বলে জানিয়েছে৷
দৃশ্যত সংশ্লিষ্ট ট্রাকটি গত শুক্রবার ইটালি থেকে যাত্রা শুরু করে ও মিলানের কাছে একটি কারখানা থেকে ইস্পাতের ল্যামিনেট তোলার পর ১৬ই ডিসেম্বর ব্রেনার পাস দিয়ে অস্ট্রিয়ায় প্রবেশ করে৷ এ খবর দিয়েছে ইটালির আনসা সংবাদ সংস্থা৷ অপরদিকে পোলিশ ট্রাক কোম্পানির মালিক বলেছেন যে, পোলিশ ট্রাক চালককে ট্রাকের ভিতরেই ছুরি মেরে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে৷
২৩ বছর বয়সের ধৃত রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ২০১৫ সালের শেষের দিকে জার্মানিতে আসে ও রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, বলে জানিয়েছিলেন জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়ের৷ দৃশ্যত সে ছোটখাটো আইনভঙ্গের জন্য পুলিশের কাছে পরিচিত ছিল এবং বাতিল টেম্পেলহোফ বিমানবন্দরের কাছে একটি উদ্বাস্তু আবাসনে বাস করছিল৷
চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল তাঁর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে, এই আক্রমণ একটি সন্ত্রাসের ঘটনা বলেই ধরে নিতে হবে৷ ‘‘আমি জানি এটা আমাদের সকলের পক্ষেই বিশেষভাবে অসহনীয় হবে, যদি দেখা যায় যে, যে এই ব্যক্তি নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছিল৷''
বার্লিনের এই ঘটনার ফলে ম্যার্কেলের উদ্বাস্তু নীতি পরিবর্তনের দাবি আবার মাথা চাড়া দিয়েছে৷ ম্যার্কেলের সিডিইউ দলের সহযোগী বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের প্রধান হর্স্ট জেহোফার বলেছেন, ‘‘যারা আক্রমণের শিকার হয়েছে ও সেই সঙ্গে সমগ্র জনগণের কাছে আমাদের দায়িত্ব হলো, আমাদের অভিবাসন ও নিরাপত্তা নীতি পুনর্বিবেচনা করে তা পরিবর্তন করা৷'' অপরদিকে অভিবাসন বিরোধী এএফডি দলের নেত্রী ফ্রাউকে পেট্রি বলেছেন যে, জার্মানি আর নিরাপদ নয় এবং ‘‘উগ্রপন্থি ইসলামি সন্ত্রাসবাদ জার্মানির হৃদয়ে আঘাত হেনেছে৷’’
বহির্বিশ্বের প্রতিক্রিয়াও অপ্রত্যাশিত নয়৷ স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রব্যার্ট ফিকো বলেছেন, এই আক্রমণ অভিবাসন সম্পর্কে মানুষের ধ্যানধারণা বদলে দেবে৷ ‘‘মানুষের ধৈর্য শেষ হচ্ছে; ইউরোপের জনগণ ন্যায্যত আরো কড়া পদক্ষেপ প্রত্যাশা করবে৷'' ব্রিটেনের ইউকিপ দলের নাইজেল ফারাজ টুইট করেছেন: ‘‘এ ধরনের ঘটনা হবে ম্যার্কেলের উত্তরাধিকার৷''
প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি বিবৃতিতে মন্তব্য করেছেন, ‘‘ইসলামপন্থি সন্ত্রাসবাদীরা খ্রিষ্টানদের একটানা হত্যা করে চলেছে৷'' টুইটারে তিনি বলেছেন, ‘‘সভ্য জগতকে তার চিন্তাধারা পাল্টাতে হবে৷''
এসি/ডিজি (ডিপিএ, এপি, রয়টার্স)
‘‘উগ্রপন্থি ইসলামি সন্ত্রাসবাদ জার্মানির হৃদয়ে আঘাত হেনেছে’’ – এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী? জানান নীচের ঘরে৷