কুড়ামকুলামে বিক্ষোভ
৮ অক্টোবর ২০১২দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের কুড়ানকুলাম পরমাণু কেন্দ্রকে ঘিরে ফের প্রতিবাদ বিক্ষোভ৷ পরমাণু চুল্লির সামনে প্রতিবাদকারিরা, যাদের মধ্যে বেশিরভাগ মৎসজীবী, অবরোধ গড়ে তোলে৷ তাদের দাবি, এই কেন্দ্র বন্ধ করা না হলে তাদের জীবন ও জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়বে৷ জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রের দুর্ঘটনার উল্লেখ করেন৷
স্থানীয় লোকজনদের আশঙ্কা দূর করতে দুটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়৷ একটি কেন্দ্রীয় স্তরে, অন্যটি রাজ্য স্তরে৷ উভয় কমিটি স্থানীয় মৎসজীবী, পরমাণু বিদ্যুৎ বিরোধী গণআন্দোলন সংগঠনের প্রতিনিধি এবং অন্যান্য গ্রামবাসিদের সঙ্গে কথা বলে ঐ কেন্দ্রকে নিরাপদ বলে ঘোষণা করেছে৷ তাই পরমাণু বিদ্যুৎ কমিশনের চেয়ারম্যান মনে করেন, এই বিক্ষোভ অনভিপ্রেত৷
প্রতিবাদ বিক্ষোভের মধ্যেই আজ রুশ-নির্মিত কুড়ানকুলাম পরমাণু কেন্দ্রের প্রথম চুল্লিতে ৭০ টন ইউরেনিয়াম জ্বালানি ভরা হয়৷ এরপর নিয়ন্ত্রিত পরমাণু ফিশনের চেন-রিঅ্যাকশনে তাপ উৎপন্ন হবে৷ চুল্লি স্থিতিশীল হলে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দক্ষিণ ভারতের চারটি রাজ্যের ২০ কোটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে৷
এক জনস্বার্থ আবেদনে সংগঠনের কর্মকর্তারা পরমাণু কেন্দ্রের সুরক্ষা কবচ নিয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা চ্যালেঞ্জ করেন সুপ্রিম কোর্টে৷ তামিলনাড়ু হাইকোর্টে তা আগেই খারিজ হয়ে যায়৷ সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য বলেছে, জনজীবনের নিরাপত্তার আশঙ্কা থাকলে তা বন্ধ করা যেতে পারে৷ এই নিয়ে পরবর্তি শুনানি হবে৷
জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থপনা সংস্থার বিজ্ঞানি ড. চন্দন ঘোষ মনে করেন, যেখানে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে সেখানকার জল, বায়ু, মাটিতে কী ধরণের রেডিয়েশন হচ্ছে, তা নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত৷ পরীক্ষা করার কতগুলো মাপকাঠি আছে৷ ডয়চে ভেলেকে উনি বললেন, শুধু মানুষের স্বাস্থ্য নয়, পরমাণু কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের উচিত পশুপাখি, উদ্ভিদ, জলবায়ু, মাটি ও মাটির উর্বরতার ওপর তেজস্ক্রিয়তার বিপদ নিয়মিত পরীক্ষা এবং মনিটরিং করার ব্যবস্থা রাখা৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ