বিদেশি ফ্যাশন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মিয়ানমারে
১১ অক্টোবর ২০১০গত দু'দশকের মধ্যে আগামী মাসে প্রথমবারের মতো নির্বাচন হতে যাচ্ছে মিয়ানমারে৷ যদিও পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই নির্বাচন সুষ্ঠু হবেনা এবং বেসামরিক শাসনের অন্তরালে সামরিক শাসনই বজায় থাকবে৷ কিন্তু এর প্রভাব কি পড়ছে ফ্যাশন জগতে?
মিয়ানমারে ক্রমবিকাশমান ফ্যাশন ধারণার প্রবর্তক হলেন চ্যান চ্যান ক্লেয়ার৷ এই সেলিব্রেটি যখন ইয়াঙ্গন রেস্টুরেন্টে চুমকি বসানো ছোটোখাটো পোশাক পরে টেবিলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, সবার চোখ আটকে গিয়েছিলো তাঁর উপর৷
বাইশ বছর বয়সি মডেল ও গায়িকা বাবলি৷ চলতি ফ্যাশন নিয়ে আলোচনায় বসার আগেই কোমল পানীয়ের অর্ডার দিলেন৷ বললেন, ‘‘দু:খিত, আমার দেরি হয়ে গেছে৷'' তিনি তাঁর প্রথম একক অ্যালবামের কাজ নিয়ে খুবই ব্যস্ত রয়েছেন৷ কিন্তু চ্যান চ্যান তাঁর বের করা পোশাকের মডেল হিসেবেই পরিচিত করেছেন তাঁকে৷
চ্যান চ্যান বলছেন, ‘‘ মেয়েরা স্কার্ট পরতে এখন অনেক বেশি পছন্দ করছে৷ আমরা প্রতিদিনই এদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছি এবং নতুন নতুন ফ্যাশনের খোঁজ করছি৷ এক্ষেত্রে আমরা ইন্টারনেটের সাহায্য নিচ্ছি৷ চ্যাট করছি এবং পশ্চিমা বিশ্বের ও এশিয়ার ফ্যাশনের দিকে খেয়াল রাখছি৷''
তিনি আরও বললেন, গত তিন বছরে এই ধরণের ফ্যাশনেবল পোশাক পরতে আমরা বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করছি৷ আপনি যদি ছোটোখাটো পোশাক পরেন,এখন আর কেউ আপনার দিকে তাকাবেনা৷ আসলে এখন আর এটি কোনো সমস্যাই না৷
এদিকে, সামরিক সরকারের মুখপত্র ‘নিউ লাইট অফ মিয়ানমার' পত্রিকায় অবশ্য সম্প্রতি বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সমাজ এই ধরণের পোশাক সমর্থন করেনা৷ সেখানে বলা হয়েছে, নিজ নিজ সমাজের কথা মাথায় রেখেই পোশাক পরা উচিত৷ মিয়ানমারের ঐতিহ্যগত পোশাক ‘লুঙ্গি' যা এখনও উচ্চ বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশটির বেশিরভাগ জায়গায় কর্মক্ষেত্রের পোশাক হিসেবে পরা বাধ্যতামূলক৷
গৃহবন্দি বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী অং সান সুচি জনসমক্ষে উপস্থিত হবার সুযোগ পেলে দেশের সনাতন পোশাক পরেই দেখা দেন৷ ফলে দেশটির অনেক পুরুষ ও নারী এখনও সূক্ষ্ম নকশার রং বেরঙের লুঙ্গি পরতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে৷
তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে শহুরে মেয়েরা অবশ্য এই সাবেকি জাতীয় পোশাক আর পরতে চাইছে না৷ নৈতিকতা আর পরিমিতির কচকচিতে কান না দিয়ে তারা প্রথাভাঙা বিকল্পের সন্ধান করছে৷ চ্যান চ্যান বলছেন, ‘‘তারা এখন জানে আমাদের দেশ ফাশ্যনে অনেকটা এগিয়ে গেছে এবং এখন তারা শর্ট স্কার্ট পরতে খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে৷ পোশাকের এই স্বাধীনতা কি তারা এখন জানে এবং তাদের আত্মবিশ্বাসও আগের চেয়ে বেড়েছে৷''
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক