অবশেষে কিয়েভে গেলেন শলৎস
১৬ জুন ২০২২ইউক্রেন যুদ্ধের চতুর্থ মাসে সে দেশের রাজধানী কিয়েভে যাচ্ছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷ তবে একা নয়, সঙ্গে থাকছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ও ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাগি৷ যুদ্ধের সময় অ্যামেরিকা ও ইউরোপের একাধিক নেতার কিয়েভ সফরের পর অবশেষে জার্মান চ্যান্সেলরের উপস্থিতি বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ বিশেষ করে জার্মানির প্রতি বিশাল প্রত্যাশা এখনো পূরণ না হওয়ায় ইউক্রেনের ক্ষোভ শলৎস অন্তত কিছুটা দূর করতে পারেন কিনা, সে দিকেই সবার নজর৷
প্রাথমিক দুর্বলতা কাটিয়ে ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে রুশ বাহিনী জমি দখলে যথেষ্ট সাফল্য দেখাচ্ছে৷ হামলাকারীদের মোকাবিলা করতে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে আরও অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সরঞ্জাম চেয়ে আসছে ভলোদোমির জেলেনস্কির সরকার৷ অ্যামেরিকা, ব্রিটেন ও পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশ সংকটের শুরু থেকেই ইউক্রেনকে অনেক সামরিক সহায়তা দিয়ে চললেও জার্মানি, ফ্রান্স ও ইটালির ভূমিকায় ইউক্রেনের নেতৃত্ব বার বার হতাশা প্রকাশ করছে৷ রাশিয়ার প্রতি এই তিন দেশের মনোভাবও প্রবল ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
কিয়েভ সফরে শলৎস, মাক্রোঁ ও দ্রাগির ঝুলিতে কত পরিমাণ অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম থাকবে, সে দিকেই সবার নজর৷ প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও অস্ত্র সরবরাহে বিলম্ব দূর করতেও শলৎস কতটা উদ্যোগ নেবেন, সেটাও চর্চার বিষয়৷ তবে যথেষ্ট সামরিক সহায়তার ঘাটতি পূরণ করতে ইউক্রেনের প্রতি রাজনৈতিক সংহতি দেখাতে পারেন এই নেতারা৷ বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রশ্নে ইইউ-র এই তিন প্রধান শক্তির সমর্থন পেলে কিয়েভের ক্ষোভ কিছুটা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ বুধবারই বলেন, যে ইউক্রেনের মানুষের ‘সাহসি' সংগ্রামের মাঝে ইউরোপের স্পষ্ট রাজনৈতিক সংকেতের প্রয়োজন রয়েছে৷ উল্লেখ্য, শুক্রবার ইইউ কমিশন ইউক্রেনকে প্রার্থী দেশ হিসেবে স্বীকৃতির প্রশ্নে নিজস্ব অবস্থান জানাবে৷
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার কড়া নিন্দা করলেও মস্কোর সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছে জার্মানি ও ফ্রান্স৷ ন্যাটো তথা ইইউ সম্পর্কে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের রোষ নিয়ন্ত্রণে রাখতে শলৎস ও মাক্রোঁ অতিরিক্ত সংযম দেখাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠছে৷ মঙ্গলবার জার্মানির এক টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, এ ক্ষেত্রে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য না রেখে স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে৷ শলৎস অবশ্য বার বার এমন অভিযোগ অস্বীকার করে অস্ত্র সরবরাহে বিলম্বের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরছেন৷ তাঁর মতে আধুনিক ও জটিল সামরিক সরঞ্জাম যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর আগে ইউক্রেনের সৈন্যদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ শেষ করতে হবে৷ জার্মানিতে বর্তমানে সেই প্রশিক্ষণ চলছে৷ তবে প্রবল সমালোচনার মুখে কোণঠাসা জার্মান সরকার অস্ত্র সরবরাহের প্রশ্নে স্বচ্ছতা ও স্পষ্ট অবস্থান না দেখিয়ে বার বার নতুন যুক্তি পেশ করায় জার্মানিতেও অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে৷ এমনকি এই সংকটে রাশিয়াকে প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতেও জার্মান নেতৃত্বের দ্বিধা প্রশ্নের মুখে পড়ছে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)