‘বিমানকে ঢেলে সাজানো দরকার’
৯ জানুয়ারি ২০১৩সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সরকার বিমানের পিছনে বড় বিনিয়োগ করেছেন, নতুন বিমান ইত্যাদি কেনা হয়েছে৷ সব সত্ত্বেও বিমানের যে ‘ঘুরে দাঁড়ানোর' আশা ছিল, তা কিন্তু পূর্ণ হয়নি৷ তার কারণ হিসেবে ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বললেন, ‘‘সামগ্রিক ব্যবস্থাপনাতে কিছু উন্নতি হয়নি৷ কিছু বিনিয়োগ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু বাংলাদেশ বিমানের একটি আন্তর্জাতিক মানের সেবা দেবার জন্য যে ধরণের ব্যবস্থাপনা থাকা দরকার, তার কোনো উন্নতি হয়নি৷ হয়ত কিছু বিমান কেনা হয়েছে, কিছু বিনিয়োগ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু যাত্রীসেবা বলতে যা বোঝায়, সেই জায়গাতে খুব বেশি উন্নতি হয়নি৷''
সাম্প্রতিক মন্ত্রীবদলের ফলেও অবস্থার বিশেষ হেরফের ঘটেছে বলে শ্যামল দত্ত মনে করেন না৷ বিমানের অভ্যন্তরে নানামুখী দ্বন্দ্ব, চেয়ারম্যান বনাম এমডি এবং চেয়ারম্যান বনাম মন্ত্রী, বা অন্যান্য বিভিন্ন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, এগুলোও সমস্যার সমাধান না হওয়ার একটা বড় কারণ বলে তিনি মনে করেন৷ সরকারপন্থি ইউনিয়ন যে আন্দোলন করছে, তাকেও তিনি সরকারের সঠিক নজরদারির অভাবের পরিচায়ক বলেই মনে করেন৷ ফলে ‘‘একটি পেশাদারিত্ব নিয়ে বিমানকে পরিচালনা করার সবচেয়ে জরুরি বিষয়টি'' উপেক্ষিত হচ্ছে৷
মধ্যপ্রাচ্যের বিমান সংস্থাগুলো ঢাকা থেকে তাদের সেবা বাড়িয়ে চলেছে৷ এত চাহিদা সত্ত্বেও বাংলাদেশ বিমান তার সুযোগ নিতে পারছে না কেন? এই প্রসঙ্গে শ্যামল দত্ত উল্লেখ করেন যে, এমিরেটস-এর দিনে উড়াল আছে তিনটি৷ রিয়াধের উড়াল, জেদ্দার কিংবা কাতারের উড়াল৷ এর কারণ, ‘‘মধ্যপ্রাচ্য আমাদের জন্য একটা বিশাল শ্রমবাজার৷ ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ বাংলাদেশি নাগরিক সেখানে বসবাস করে৷'' কিন্তু বাংলাদেশ বিমানের উপর যাত্রীরা ভরসা করতে পারেন না, শিডিউল ঠিক থাকে না, যাত্রীদের অন্যান্য সেবাও ঠিকমতো হয় না৷ বাংলাদেশিরা বিমানে যেতে পছন্দ করা সত্ত্বেও ‘‘টিকিট পেতে সমস্যা হয়৷ টিকিট থাকলেও নাই বলে৷''
আসল কথা হল, ‘‘বিমানের যে পুরনো বিমানের বহর, এগুলি দিয়ে এখন আর আধুনিক বিমান সংস্থা চলতে পারে না৷'' ছয়টি না পাঁচটি মাত্র বিমান, অথচ পাঁচ-ছয় হাজার কর্মচারী৷ বাংলাদেশ বিমানের বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো বিদেশি বিমান সংস্থার সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চার বা যৌথ উদ্যোগকেই সঠিক পন্থা বলে মনে করেন শ্যামল দত্ত৷ ‘‘সামগ্রিকভাবে ঢেলে না সাজালে এই পরিস্থিতির আগামীতেও কোনো উন্নতি হবে না৷''