বিমানবন্দরে ল্যাব বসলেও পিসিআর টেস্ট শুরু হয়নি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১বিমানবন্দরের দ্বিতীয় তলায় করোনার নমুনা সংগ্রহের বুথ থেকে মঙ্গলবার বিমান যাত্রীদের নমুনা পরীক্ষা শুরু করার কথা থাকলেও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) না পাওয়ার কারণে নমুনা পরীক্ষা শুরু করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মাহবুব আলী৷
দুপুর একটায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি বাংলাদেশ (ক্যাব) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান জানান, গত কয়েকদিনে দুবাইগামী বিশেষ ফ্লাইটের কিছু যাত্রীদের যেভাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা করে এতদিন পাঠানো হয়েছিল, সে পদ্ধতি আজ থেকে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে৷ আমরা কঠোর অবস্থানে যাচ্ছি এখন৷ আজকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের যে ফ্লাইটটি দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রীদের নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেটিও ক্যান্সেল করা হয়েছে৷
ছয়টি ল্যাবের মধ্যে এতদিন শুধু ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিকের এসওপি থাকার কারণে সেটির মাধ্যমে যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা করে আমরা তাদের দুবাইতে পাঠাচ্ছিলাম৷ বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর এসওপি ক্লিয়ারেন্স না থাকায় আমরা সেগুলো প্রস্তুত থাকলেও কাজে লাগাতে পারছি না৷ যাত্রীদের স্বার্থেই আমরা দুবাইগামী ফ্লাইট বন্ধ করেছি কারণ যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ না করলে দুবাই কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের আবার দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিতে পারে এবং তাতে যাত্রীরাই ক্ষতির সম্মুখীন হবেন৷ গতবছর প্রায় দেড়শ জন যাত্রীকে এভাবে দুবাই কর্তৃপক্ষ ফেরত পাঠিয়েছিল৷ আমরা আর সে ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাচ্ছি না৷ এখন শুধু এসওপিতেই পুরো পদ্ধতি আটকে আছে৷ আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি৷''
যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাদের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত হবে জানতে চাইলে এম মফিদুর রহমান বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দূতাবাসের সাথে আমার কথা হয়েছে৷ যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ, তাদের বিশেষ বিবেচনায় মেয়াদ বৃদ্ধি করা হবে বলে দূতাবাস আমাকে জানিয়েছে৷
কবে নাগাদ করোনা পরীক্ষা শুরু করা যাবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, এ বিষয়ে কোন নির্দিষ্ট তারিখ বা সময় বলা যাচ্ছে না৷ আমরা এসওপি ক্লিয়ারেন্স পেলেই এয়ারলাইন্সগুলোকে বলে যাত্রী পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করবো৷ খুব দ্রুত বিষয়টি নিষ্পন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ৷
এদিকে ১১ বছর ধরে দুবাই প্রবাসী নোয়াখালীর বাসিন্দা মো গিয়াস উদ্দিন শাহজালাল বিমানবন্দরে আজকে এসেও করোনা পরীক্ষা শুরু না হওয়া দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন৷ তিনি জানান, পায়ের চিকিৎসার জন্য নয় মাস আগে তিনি দেশে এসে আটকা পড়েন৷ এখন আর যেতে পারছেন না৷ তার ভিসার মেয়াদ আর তিন-চার মাসের মতো আছে৷ এমিরেটস এয়ারলাইন্সের আঞ্চলিক অফিসে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, আপাতত কোন টিকেট তারা বিক্রি করছেন না৷ কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি সাংবাদিককের প্রশ্ন করেন, ‘‘টিকিট যদি না-ই থাকে, তবে বিশেষ ফ্লাইটে প্রতিদিন কিভাবে ৫০-৭০ জন দুবাই যাচ্ছে? তারা টিকিট পেলে আমরা কি দোষ করসি? দুবাইতে আমাদের চাকরি না থাকলে আমরা কিভাবে আমাদের সংসার চালাবো? বউ-বাচ্চা নিয়ে আমাদের তো পথে বসতে হবে৷''