বিরুদ্ধবাদী হত্যার তদন্ত করুন : রাশিয়াকে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টাইনমায়ার
২১ ডিসেম্বর ২০০৬লন্ডনে তেজস্ক্রিয় পলোনিয়ামের বিষক্রিয়ায় সাবেক রুশ গুপ্তচর আলেকজান্ডার লিটভিনেংকোর মৃত্যু এবং বিরুদ্ধবাদী সাংবাদিক আনা পোলিটকভস্কায়া-র সাম্প্রতিক হত্যাকান্ডের ঘটনার সূত্র ধরে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টাইনমায়ার খুব স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন : সবিস্তারে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা খোলাসা করার সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখাতে হবে অবশ্যই রাশিয়ার নিজেকে৷ রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ জবাবে বলেন, নিজের জায়গায় রাজনৈতিক হত্যাকান্ড ঘটছে, দূর্ণীতি হচ্ছে অথবা অন্য কোন অপরাধমূলক কাজ হচ্ছে এটা কোন দেশই দেখতে আগ্রহী নয়৷ গত ২৩শে নভেম্বর মাসে পোলোনিয়াম-২১০ এর তেজস্কৃয়ায় ক্রেমলিনের সমালোচক বলে পরিচিত সাবেক রুশ গুপ্তচর লিটভিনেংকোর মৃত্যু প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে গিয়ে লাভরভ বলেন, এই ঘটনার সব তথ্য আলোয় আনতে হবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের৷ এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করলে চলবে না৷ উল্লেখ্য, পুটিন সরকারের কড়া সমা লোচক বলে পরিচিত সাংবাদিক আনা পোলিটকভস্কায়া নিহত হন অক্টোবর মাসে৷
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ-এর সঙ্গে আলোচনার পর স্টাইনমায়ার সাংবাদিকদের বলেছেন : জার্মানি রাশিয়াকে এক গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবেই দেখে৷ তবে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সমালোচনার অর্থ এটাই যে, ইউরোপ নিজেকে আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে রাশিয়ার অভ্যন্তরের কিছু ঘটনা নিয়ে সংশয় সত্ত্বেও জার্মানি চায় ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা, বলেছেন স্টাইনমায়ার৷ একই সঙ্গে তিনি একথাও জোর দিয়ে বলেছেন যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাবী সভাপতি দেশ হিসেবে জার্মানির লক্ষ্য হবে রাশিয়া আর ই.ইউ-র মধ্যে নতুন এক সহযোগিতাচুক্তি সম্পাদন করা৷ পয়লা জানুয়ারী থেকে জার্মানি ফিনল্যান্ডের কাছ থেকে ই.ইউ. পরিষদের সভাপতিত্ব হাতে নিচ্ছে ছ মাসের জন্য৷ তা ছাড়া জানুয়ারি মাসেই রাশিয়া সহ আট অগ্রণী শিল্পোন্নত দেশের জি.এইট গ্রুপের সভাপতিত্বও গ্রহণ করবে জার্মানি রাশিয়ার কাছ থেকে৷ ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে জার্মানি রাশিয়ার সঙ্গে নতুন সহযোগিতা চুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী৷ বর্তমান চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০০৭-এ৷ নতুন চুক্তির মধ্য দিয়ে ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার সংযোগ আরো দৃঢ় করা হবে এবং জ্বালানীক্ষেত্রে সহযোগিতারও একটা কাঠামো তৈরি করা হবে৷ স্টাইনমায়ার বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা ছাড়া বেশ কিছু ক্ষেত্রে ইউরোপ এগিয়ে যেতে পারবে না৷ তিনি প্রসঙ্গত কসোভোর মর্যাদা, ইরানের সঙ্গে পরমাণু বিরোধ এবং মধ্যপ্রাচ্যের সংকটের কথা উল্লেখ করেছেন৷
আগামি ফেব্রুয়ারি মাসে জার্মানির মিউনিখ শহরে অনুষ্ঠেয় নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যারকেল-এর আমন্ত্রণ পত্র প্রেসিডেন্ট পুটিনের হাতে তুলে দিয়েছেন স্টাইনমায়ার৷