1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সোশ্যাল মিডিয়া’

২ মে ২০১২

৩রা মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সবসময়ই আলোচনার বিষয়৷ নিরপেক্ষভাবে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে এখনো বাধা রয়েছে৷ এই সীমাবদ্ধতার কারণে শক্তিশালী হয়ে উঠছে বিকল্প ‘সোশ্যাল মিডিয়া’৷

https://p.dw.com/p/14nmN
ছবি: Fotolia/N-Media-Images

গত বছরের আরব বসন্তের কথাই ধরা যাক৷ মিশর, লিবিয়া, টিউনিশিয়ার মতো দেশগুলোর গণমাধ্যম ঠিক স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারতো না৷ স্বৈরশাসকদের অস্ত্রের নলের মুখে মূলধারার গণমাধ্যম ছিল অসহায়৷ কিন্তু মূলধারার গণমাধ্যমের নীরবতা সত্ত্বেও ফুসলে উঠল এসব দেশের সাধারণ মানুষ৷ তারা হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিল স্যোশাল মিডিয়াকে৷ আরো সহজ করে বললে ব্লগ, ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব'কে৷ এসব সোশ্যাল মিডিয়া আরব বিশ্বের সাধারণ মানুষকে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ করে দিল৷ ইন্টারনেটে যে স্বাধীনতা তারা পেয়েছে, সেটির প্রতিফলন ঘটেছে রাজপথে৷ হোসনি মোবারক, বেন আলী কিংবা গাদ্দাফিরা আজ আর ক্ষমতায় নেই৷ পতন ঘটেছে স্বৈরতন্ত্রের, এখন গণতন্ত্রের হাওয়া বইছে মিশর, টিউনিশিয়া এবং লিবিয়ায়৷

ইন্টারনেটভিত্তিক স্বাধীন বিকল্প মিডিয়ার সন্ধান মানুষ পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাই বলে কি প্রচলিত গণমাধ্যম পরাধীনতার শিকলে বাঁধা থাকবে? এমনটা আসলে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা নয়৷ যে কারণে, স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের ধারাকে উৎসাহিত করতে, প্রতি বছরের তেসরা মে উদযাপন করা হচ্ছে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস৷ ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ এই দিনটিকে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়৷

প্রশ্ন আসতে পারে, বিশেষ এই দিবসের তাৎপর্য কী? আসলে এই দিনটিকে উপলক্ষ্য করে অনেক দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টি আবারো আলোচিত হয়৷ মানুষকে জানানো হয়, এখনো বিশ্বের কয়েক ডজন দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই৷ মুক্তভাবে মত প্রকাশের অধিকার নেই৷ এখনো সাংবাদিক, সম্পাদকরা প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছেন, নির্যাতিত হচ্ছেন, নিহত হচ্ছেন৷

Beginn arabischer frühling 2011 Tunesien Tunis Demonstration Ausschreitungen Tränengas
আরব বসন্তছবি: AP

বাংলাদেশের কথাই ধরা যাক৷ মাত্র কয়েকদিন আগে দৈনিক সমকাল পত্রিকার সম্পাদক গোলাম সারোয়ারকে একটি প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে হুমকি প্রদান করা হয়েছে৷ গোলাম সারোয়ার এই ঘটনার পর থানায় জিডি করেছেন৷ এছাড়া চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় খুন হয় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার এবং মেহেরুন রুনি৷ বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রখ্যাত আলোকচিত্রশিল্পী ও ব্লগার ড. শহীদুল আলম বলেন, ‘‘আগে যতটা স্বাধীনতা ছিল, এখন তার চেয়ে বেশি আছে৷ আগে আমরা অনেক কিছু বলতে পারতাম না৷ এখন বলার সুযোগ আছে৷ কিন্তু সেটার সঙ্গে আবার যে হুমকিগুলো এখন দাঁড়িয়ে গেছে, সেগুলো উপেক্ষা করার কারণ নেই৷ বাংলাদেশে কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ হয়ে গেছে৷ এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অজুহাত দেখানো হয়েছে৷''

ডয়চে ভেলের সেরা ব্লগ অনুসন্ধান প্রতিযোগিতার জুরিমণ্ডলীর সদস্য ড. শহীদুল আলম৷ তিনি সহ আরো দশটি ভাষার জুরি সদস্য বর্তমানে জার্মানির রাজধানী বার্লিনে অবস্থান করছেন৷ ডয়চে ভেলের এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, ‘‘ইন্টারনেটের মাধ্যমে মতবিনিময়ের বৈচিত্র্য এবং তাৎপর্যকে তুলে ধরা, সেই ধরনের মতবিনিময়ের শ্রেষ্ঠ নমুনাগুলিকে পেশ করা এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে আলাপচারিতার ব্যাপারে বিভিন্ন ভাষার ব্লগারদের মধ্যে একটি সংলাপ সৃষ্টি করা৷''

প্রচলিত গণমাধ্যমের উপর নিষেধাজ্ঞার কারণে ইন্টারনেটভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে, মনে করেন ব্লগ প্রতিযোগিতার জুরিমণ্ডলীর চীনা সদস্য আইস্যাক মাও৷ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বলেন, ‘‘চীনের প্রচলিত গণমাধ্যম পুরোপুরি সরকার নিয়ন্ত্রিত৷ ফলে নিজেদের মতামত প্রকাশের জন্য তরুণ প্রজন্ম নতুন মিডিয়ার দিকে ঝুঁকছে৷ যদিও চীনে ইন্টারনেটের উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, তারপরও তরুণ প্রজন্ম তথ্য আদানপ্রদানের বিভিন্ন উপায় বের করছে৷ এভাবেই তারা সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে খুব দ্রুত সংঘবদ্ধ হতে পারছে, যা চীনের শাসক গোষ্ঠীর জন্য সুখবর নয়''৷

উল্লেখ্য, চীন, ইরান, সিরিয়াসহ বিশ্বের কয়েক দেশে এখনও গণমাধ্যমের উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ প্রতি বছর অসংখ্য সাংবাদিক প্রাণ হারাচ্ছে পেশাগত কারণে৷ রিপোর্টার্স উইদাআউট বডার্স'এর হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ১৯৷ এছাড়া কারাবন্দি রয়েছেন ১৬১ সাংবাদিক এবং ১২১ নেটিজেন৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য