বিশ্বে রাজনৈতিক ক্ষমতায় নারীর অবস্থান
বর্তমানে বিশটিরও বেশি দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান নারী৷ কিন্তু স্থানীয় সরকার, সংসদ ও মন্ত্রিপরিষদে নারীদের প্রতিনিধিত্বের হার এখনও যথেষ্ট কম৷
২২টি দেশে
জাতিসংঘের হিসাবে বর্তমানে ২২টি দেশে নারীরা সরকার বা রাষ্ট্রের নেতৃত্বে দিচ্ছেন৷ ১১৯টি দেশে এখনও কোন নারীনেতৃত্ব তৈরি হয়নি৷ ইউএন উইমেন এর হিসাবে, বর্তমান হারে ক্ষমতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে লিঙ্গ সমতা আসতে আরো ১৩০ বছর লাগবে৷
সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান
মাত্র দশটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান নারী৷ ১৩ টি দেশে সরকার প্রধান হিসেবে নারীরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ কোনো কোনো দেশে দুটি পদেই নারীরা নেতৃত্বে রয়েছেন৷ এই তালিকায় কেবল নির্বাচিত সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদেরই বিবেচনা করা হয়েছে৷ (ছবি: ২০১১ সালে বার্লিনে জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷)
মন্ত্রিত্ব সিকিভাগের কম
২০২০ সালে বিশ্বে মাত্র ২১ শতাংশ নারী মন্ত্রীত্ব পেয়েছেন৷ কেবল ১৪টি দেশে মন্ত্রিপরিষদে নারীর সংখ্যা ৫০ শতাংশ বা তার বেশি৷ বর্তমান হারে বাড়লে গোটা বিশ্বে কেবল মন্ত্রী পর্যায়ে নারীদের অংশগ্রহণে সমতা আসতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ২০৭৭ সাল পর্যন্ত৷ (ছবিতে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন এর সঙ্গে তার মন্ত্রিপরিষদের তিন সদস্য৷)
নারীদের মন্ত্রণালয়
নারীরা সচরাচর যেসব মন্ত্রণালয়গুলোর দায়িত্ব পান তার মধ্যে সবার উপরে আছে পারিবারিক, শিশু, যুব, প্রবীণ কিংবা প্রতিবন্ধী বিষয়ক মন্ত্রণালয়৷ দ্বিতীয় অবস্থানে সমাজ কল্যাণ৷ এরপরে রয়েছে পরিবেশ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়৷ চতুর্থ শ্রম, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ এবং পঞ্চম নারী বা লিঙ্গ সমতা মন্ত্রণালয়৷ (ছবি: বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি৷)
সংসদে নারী
বর্তমানে বিশ্বে জাতীয় সংসদগুলোতে ২৫ শতাংশ নারী জনপ্রতিনিধি রয়েছেন৷ ১৯৯৫ সালের তুলনায় এই হার ১১ ভাগ বেড়েছে৷ (ছবি: ইথিওপিয়ার সংসদ৷)
ব্যতিক্রম
মাত্র চারটি দেশের সংসদে নারী জনপ্রতিনিধি ৫০ শতাংশের বেশি৷ এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রুয়ান্ডা৷ দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষে ৬১ শতাংশই নারী৷ কিউবা ও বলিভিয়ায় এই হার ৫৩ শতাংশ৷ সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংসদে নারী প্রতিনিধির সংখ্যা পুরুষের সমান৷ (২০২০ সালে রুয়ান্ডার নির্বাচনের ভোট গ্রহণের ছবি৷)
চল্লিশের উপরে
আরো ১৯টি দেশে নারী জনপ্রতিনিধির হার ৪০ ভাগ বা তার বেশি৷ এর মধ্যে নয়টি ইউরোপের, পাঁচটি লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ার, চারটি আফ্রিকা আর একটি দেশ প্রশান্ত মহাসাগরীয়৷ (ছবি: এস্তোনিয়ার সংসদ৷)
দশ শতাংশের কম
বিশ্বে এক কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ অথবা সংসদের নিম্নকক্ষে নারী জনপ্রতিনিধি ১০ শতাংশেরও কম এমন ২৭ টি দেশ আছে৷ বর্তমান হার বজায় থাকলে বিশ্বে ২০৬৩ সালের আগে সংসদে লিঙ্গ সমতার সম্ভাবনা নেই৷ (ছবি: ইরানের সংসদ৷)
স্থানীয় সরকার
১৩৩টি দেশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বের স্থানীয় সরকার পর্যায়ে নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধি প্রায় ২২ লাখ, যা মোট জনপ্রতিনিধির ৩৬ শতাংশ৷ দুইটি দেশে এই হার ৫০ শতাংশ আর আরো ১৮টি দেশে ৪০ শতাংশের বেশি৷ (ছবি: ২০২০ সালের নভেম্বরে বসনিয়া-হ্যারৎসেগোভিনার স্থানীয় সরকার নির্বাচন৷)
নারীর ক্ষমতায়ন সূচক
এইসব তথ্যের ভিত্তিতে নারী ক্ষমতায়ন সূচক তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাঙ্ক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস৷ ২০২০ সালের এই সূচকে রাজনৈতিক অঙ্গনে সমতায় সবচেয়ে এগিয়ে লাতিন আমেরিকার দেশ কোস্টারিকা৷ ১০০তে তাদের স্কোর ৭৪৷ এছাড়া প্রথম পাঁচে আছে রুয়ান্ডা, সুইডেন, ফিনল্যান্ড ও আইসল্যান্ড৷ (ছবি: সুইডেনের সংসদ৷)
এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল
এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোতে এই সূচকে সবার উপরে আছে নিউজিল্যান্ড৷ এরপর অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশের অবস্থান৷ বাংলাদেশের স্কোর ৩১৷ স্থানীয় সরকারে ২৫ শতাংশ, জাতীয় সংসদে ২১ শতাংশ, মন্ত্রিপরিষদে আট শতাংশ নারী প্রতিনিধি রয়েছে বাংলাদেশে৷ (ছবি: নিউজিল্যান্ডের সংসদে জেসিন্ডা আর্ডার্ন৷)