বিস্ময়কর স্টারলিং পাখি
যেন একরাশ কালো মেঘ৷ স্টারলিং পাখিগুলো এমনভাবে দলবেঁধে আকাশে উড়ে উড়ে জ্যামিতিক আকৃতি তৈরি করে যে , তা সব অ্যারোবেটিক্স দলকেই হার মানাবে৷ ক্যামেরার চোখে দেখুন ইসরায়েলের আকাশে ধরা পড়া এমন চমৎকার দৃশ্য৷
কী অপরূপ
কখনো ঝরা পাতার মতোন, কখনো ওড়ার চেষ্টা করা ঘুঘু, কিংবা কখনো সাঁতরে বেড়ানো বিশাল তিমি মাছের আকৃতি তৈরি করে পাখির ঝাঁক৷ এই স্টারলিংগুলো ইউরোপীয় পরিযায়ী পাখি৷ ইসরায়েলে আসে রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপ থেকে৷
ছোট পাখি! ছোট পাখি!
এই ছবিগুলো দক্ষিণ ইসরায়েলের বেইট কামা গ্রাম থেকে তোলা৷ রাতে ঘুমোতে যাবার আগে পাখিগুলো নানান আকৃতি তৈরি করে৷ শুধু যে এরা আকৃতি তৈরি করে তা-ই নয়, কিচিরমিচির শব্দে মাতিয়ে রাখে পুরো এলাকা৷
নিখুঁত আকার
বিজ্ঞানিরা ঠিক জানেন না, কিভাবে তারা এসব আকৃতি তৈরি করে৷ কিন্তু কেউ কেউ বলেন যে, এরা ইচ্ছে করে এমন করে না৷ বরং ঝাঁকের একটি পাখি তার নিকটবর্তী আরেকটির কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব তৈরি করে ওড়ে৷ তাতেই এমন আকৃতি তৈরি হয়৷ তা বলে এতটা নিখুঁত?
দ্রুত প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের পাখি বিশেষজ্ঞ জাকারি স্ল্যাভিন বলেন, ‘‘ঠিক যেন মাছের মতো৷ এই ঝাঁকের কোনো নেতা নেই৷ কিন্তু তারা এমনভাবে থাকে যেন একসঙ্গে একটি গন্তব্যে পৌঁছায়৷ এদের একজন গতিপথ বদলালে এরা দ্রুত সেই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে৷’’
পরিযায়ী স্টারলিং
সাধারণত শীত ও বর্ষায় স্টারলিংয়ের এমন ঝাঁক দেখা যায়৷ গ্রীষ্মের শেষ দিকে এই পাখিগুলোর প্রজনন প্রক্রিয়া শেষ হয়৷ এরপর বড় বড় ঝাঁকে এরা অভিযাত্রা শুরু করে৷ পরে শীতের শেষে অথবা বসন্তের শুরুতে এরা তাদের প্রজননস্থলে ফিরে আসে৷
দশের লাঠি একের বোঝা
কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন এরা এমন ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরে বেড়ায়? বিশ্লেষকদের মন্তব্য যে, পাখিগুলো দলবেঁধে ঘুরে বেড়ালে এদের হাজারো চোখে একসঙ্গে খাবার খোঁজা সহজ হয়৷ এতে একই খাবারের খোঁজে থাকা প্রাণিদের এ লড়াইয়ে পরাজিত করা সহজ হয়৷
বাজপাখির চোখ ফাঁকি
আরো একটি কারণ, নিরাপত্তা৷ চিল, বাজপাখিদের হাত থেকে বাঁচতে এমন উপায় বেছে নিয়েছে তারা৷ বিশ্লেষকরা বলেন, তারা এমনভাবে ঘুরে যেন, বাজপাখিদের চোখে একেকটি পাখি আলাদা করে ধরা পড়া কঠিন হয়ে যায়৷
কতদূর সমুদ্দুর
এরা যে শুধু ইউরোপেই ঘোরাঘুরি করে তা নয়৷ এই পরিযায়ী পাখিগুলোর ওড়ার সীমানা উত্তর আফ্রিকা থেকে শুরু করে দক্ষিণ ইউরোপ, এমনকি পশ্চিম এশিয়া পর্যন্ত৷