1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্যবসায়ীরা চীনে যাচ্ছেন না

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৭ জানুয়ারি ২০২০

করোনা ভাইরাসের কারণে চীনে বাংলাদেশিদের যাতায়াত ব্যাপকভাবে কমে গেছে৷ এদিকে চীনে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ফেরত আনার বিষয়ে দেশটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷

https://p.dw.com/p/3WsKa
China Peking Passanten Atemmasken
বেইজিংয়ে কয়েকজন পথচারীছবি: picture-alliance/newscom/UPI PHoto/S. Shaver

করোনা ভাইরাসের কারণে আক্রান্ত শহরগুলোর যাতায়ত ব্যবস্থা সীমিত করেছে চীনে৷ অনেক শহরই হয়ে পড়েছে বিচ্ছিন্ন৷ এমন অবস্থায় দেশটিতে আটকা পড়েছেন অনেক বাংলাদেশিও৷ তাদের ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তার এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানিয়েছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন বাংলাদেশের নাগরিক যারা চীন থেকে ফিরতে চাইবেন তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করার জন্য৷

আমরা চীন সরকারের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছি৷ কি প্রক্রিয়ায় এটি করা হবে তা বাস্তবতার নিরিখে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সম্মতির ভিত্তিতে করা হবে৷''

বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এনিয়ে চীনের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে৷ চীন সম্মত হলে যারা ফিরে আসতে চান তাদের ফিরিয়ে আনা হবে৷ চীনে আমাদের মিশন এ নিয়ে কাজ করছে৷ তবে চীনের উহানে অবস্থানরত কোনো বিদেশিকে বাইরে যেতে এখনো অনুমতি দেয়নি৷ অনুমতি পাওয়া গেলেই তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করব৷''

মাসুদ বিন মোমেন

চীনে যেসব বাংলাদেশি আছেন তাদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী৷ উহানের হুবেই ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির ছাত্র হাবিবুর রহমান হাবিব সোমবার ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘‘আমরা আমাদের ডরমিটরির কক্ষেই অবস্থান করছি৷ বাইরে যাওয়া নিষেধ৷ তবে আজ(সোমবার) থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের খাবার সরবরাহ শুরু করেছে৷ এটা অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে৷ আমাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাও শুরু হয়েছে৷'' এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ১২০ জনের মত বাংলাদেশি ছাত্র আছেন৷

পররাষ্ট্র সচিব জানান, ‘‘হটলাইন এবং অন্যান্য মাধ্যমে আমাদের দূতাবাস বাংলাদেশিদের খোঁজ খবর রাখছেন৷ তাদের সমস্যা শুনে চীনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে৷''
তবে উহানের বাইরে যেসব বাংলাদেশি আছেন তাদের দেশে ফেরার পরামর্শ দিচ্ছে দূতাবাস৷

টিকিট বাতিল করছেন ব্যবসায়ীরা

চীনের সঙ্গে ব্যবসাসহ বিভিন্ন খাতে যোগাযোগ বাড়ায় সেখানে প্রতিদিনই যাতায়াত করছেন বাংলাদেশিরা৷ তবে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে তা অনেকটাই কমে গেছে৷ চায়না বাংলাদেশ বিজসেন ক্লাবের সভাপতি আব্দুল মোমেন বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে যে ব্যবসায়ীরা চীনে যাওয়ার জন্য এয়ার টিকিট কিনেছিলেন তারা প্রায় সবাই তা বাতিল করছে৷ পরিস্থিতি ভয়াবহ৷ বলতে গেলে এখন বাংলাদেশ থেকে কেউ আর চীন যাচ্ছেন না৷ চীন থেকেও ব্যবসায়ীরা আসছেন না৷''

আব্দুল মোমেন

বস্ত্র, ইলেকট্রনিক্স, প্লাস্টিকসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল আসে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি থেকে৷ এছাড়া খেলনা, কসমেটিক, খাদ্যসহ আরো অনেক পণ্য আমদানি হয়৷ অন্যদিকে চীনে পাট ও পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদে৷ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চীনের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যের আকার ছিল ১২.৩৬ বিলিয়ন ডলার৷ যা ২০২১ সালে ১৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকারও৷ যা করোনাভাইরাসের কারণে বাধাগ্রস্ত হতে পারে৷ মোমেন জানান, ‘‘যদি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসে তাহলে বাণিজ্য পরিস্থিতি অনেক খারাপ হবে৷''

তবে চীনে মাসব্যাপী নববর্ষের ছুটি শুরু হওয়ায় প্রভাব বুঝতে সময় লাগবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা৷ কারণ চীন থেকে এই সময়ে আমদানি রপ্তানির প্রায় সবটাই জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই সম্পন্ন হয়েছে৷

বাংলাদেশে চীনা নাগরিকদের নিয়ে উদ্বেগ

তবে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ আছে আারেক জায়গায়৷ তাদের হিসাবে কমপক্ষে পাঁচ লাখ চীনা নাগরিক বাংলাদেশে শিল্প বাণিজ্যসহ বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে কাজ করছেন৷ নববর্ষের ছুটিতে তারা প্রায় সবাই দেশে ফিরে গেছেন৷

ছুটি শেষে এই নাগরিকরা বাংলাদেশে আবার তাদের কর্মস্থলে ফেরার কথা৷ তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে বলে উদ্বেগ রয়েছে৷ তবে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘‘সরকার এরইমধ্যে বিমানবন্দর, স্থলবন্দরসহ সব ধরনের আন্তর্জাতিক প্রবেশ পথে স্ক্যানিং-এর ব্যবস্থা করেছে৷ আমার মনে হয় এটা আরো কঠোর করা উচিত৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য