1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্যয় কমাতে পারে ছাদে সৌর প্যানেল ও সবজির বাগান

১৪ ডিসেম্বর ২০২২

অনেক সমস্যার সমাধান আমাদের হাতের কাছেই থাকে৷ দিল্লির এক বাসিন্দা ছাদে সৌর প্রণালী বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছেন৷ অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি তিনি পরিবেশের উপকারও করছেন৷

https://p.dw.com/p/4Kx4C
সোলার প্যানেল (প্রতীকী ছবি)
সোলার প্যানেল (প্রতীকী ছবি)ছবি: Pankaj Nangia/AA/picture alliance

ঘরে একটা পাখা রয়েছে, টেলিভিশনও আছে৷ এমনকি এয়ার কন্ডিশনরও চলছে৷ সেইসঙ্গে আরও কিছু বৈদ্যুতিক যন্ত্র চোখে পড়ে৷ এত বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করা সত্ত্বেও দিল্লির বাসিন্দা অমিত মেহতার বিদ্যুতের বিল কিন্তু শূন্য৷ সেটা কী করে সম্ভব? সেই রহস্যের সমাধান করতে হলে তাঁর বাসার ছাদে নজর দিতে হবে৷

তিনি ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ছাদে পাঁচ কিলোওয়াট ক্ষমতার সৌর প্রণালী বসিয়েছিলেন৷ সে কারণে তাঁকে আর বিদ্যুতের মাশুল দিতে হয় না৷ অমিত বলেন, ‘‘আমি প্রায় দুই লাখ পঁচিশ হাজার ভারতীয় টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম৷ প্রায় ছয় মাস ধরে আমি কোনো ইলেকট্রিক বিল দিচ্ছি না৷ তার আগে আট থেকে দশ হাজার টাকা বিল আসতো৷ ফলে আমি এর মধ্যেই বিনিয়োগের অংকের দেড় লাখ থেকে এক লাখ পঁচাত্তর হাজার টাকা ফিরে পেয়েছি৷ আগামী এক বছরে বাকি টাকাও উদ্ধার হয়ে যাবে৷ এমন সোলার প্যানেলের আয়ু প্রায় ২০ বছর৷ অর্থাৎ ২০ বছরের জন্য আমি বিনামূল্যে বিদ্যুৎ পাবো৷''

জ্বালানি সংকটের কারণে গোটা বিশ্বে পুনর্ব্যবহারযোগ্য উৎস কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ বাড়ছে৷ ভারত সরকার সোলার প্যানেল বসানোর জন্য ভরতুকিও দিচ্ছে৷ অমিত মেহতার মতে, দিল্লির মতো শহর সৌরশক্তির জন্য আদর্শ৷ তিনি বলেন, ‘‘দিল্লির যা আবহাওয়া, তাতে আজকাল আট থেকে নয় মাস সূর্যের আলো থাকে৷ শুধু তিন থেকে চার মাস তেমন সূর্যের আলো পাওয়া যায় না৷ কিন্তু সেই বিরতিও নিয়মিত নয়৷ কিছু আলো থাকেই, উত্তাপ থেকেই আসে৷ যত বেশি সূর্যের আলো, তত বেশি বিদ্যুৎ তৈরি হয়৷ শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়, কারণ রুম হিটার ব্যবহার করা হয় না৷ আমার মতে, ভারতে সবারই প্রাকৃতিক আলো, অর্থাৎ সূর্যের আলো কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা উচিত৷''

বাড়ির ছাদে বাগান ও বিদ্যুৎ উৎপাদন

অমিত মেহতা সৌরশক্তির সাহায্যে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ব্যাটারিতে ধারণ করেন না, বরং বিদ্যুৎ কোম্পানির কাছে পাঠিয়ে দেন৷ সেই একই কোম্পানি তাঁর বাসায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে৷ প্রায়ই তিনি নিজস্ব চাহিদার তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করেন৷ নিজের দেওয়ালে মিটারসহ অন্যান্য যন্ত্রগুলির বিন্যাস বর্ণনা করে অমিত বলেন, ‘‘এই সব তার সৌর প্রণালীর সঙ্গে যুক্ত৷ এই ইনভার্টারের মাধ্যমে সৌরশক্তি সরাসরি গ্রিডে সরবরাহ করা হয়৷ এখানে ওয়াইফাই রাউটার আছে, যা দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাত্রা জানিয়ে দেয়৷ আমার স্মার্টফোনে সেটা জানার অ্যাপ রয়েছে৷''

অমিত মেহতার ছাদের উপর সৌর প্রণালী ছাড়া একটি বাগানও রয়েছে৷ বড় শহরে জমির অভাব প্রকট হয়ে উঠছে৷ সে কারণে গোটা বিশ্বে রুফটপ গার্ডেনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে৷ গাছপালা বাতাস শুদ্ধ রাখতে সহায়তা করে৷ সেগুলি কার্বন-ডাই-অক্সাইড শুষে নিয়ে আমাদের অক্সিজেন দেয়৷ কংক্রিটের জঙ্গলের মধ্যেও প্রকৃতির ছোঁয়া আনে এমন গাছপালা৷ অমিত মেহতা জানান, ‘‘আমি কিছুটা অরগ্যানিক চাষও করছি৷ তাই সপ্তাহে এক বা দুই দিন বাজার থেকে শাকসবজি কিনতে হচ্ছে না৷ আমার কাছে দ্বিতীয় সুবিধা হলো, এই কাজ হবি হয়ে উঠেছে, সুন্দরভাবে সময় কাটানো যাচ্ছে৷ তার উপর পরিবেশ বা প্রকৃতির জন্য কিছু করার সুযোগও হচ্ছে৷ কী করা উচিত, তা অন্যদের বলে লাভ নেই৷ নিজের কাজের মাধ্যমে তাদের সেটা দেখিয়ে দিতে হবে৷''

সৌরশক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে অমিত মেহতা নিজের এবং পরিবেশের উপকার করছেন৷

অশোক কুমার/এসবি