ভরাডুবি সিডিইউ-র, দারুণ ফল সবুজদলের
১০ মে ২০১০সর্বশেষ সরকারি ফলাফল এখনও আসেনি৷ তবে জার্মানির সেটডেএফ টেলিভিশন চ্যানেলের দেওয়া তথ্য বলছে, খৃস্টীয় গণতন্ত্রী বা সিডিইউ পেতে চলেছে ৩৪.৩ শতাংশ ভোট৷ ২০০৫ সালের ফলাফলের অনুপাতে ১০.৫ শতাংশ কম৷ তাদের জোটসঙ্গী মুক্ত গণতন্ত্রী বা এফডিপি ৬.৬ শতাংশ৷ সব মিলিয়ে যে পরিমাণ, তাতে সরকার গড়া অসম্ভব৷ পক্ষান্তরে বিরোধী সামাজিক গণতন্ত্রী বা এসপিডি-র ফলাফল আগেরবারের তুলনায় কিছুটা ভালো, ৩৪.৩ শতাংশ৷ তবে এবারের নির্বাচনে অবাক করা ফলাফল দেখা গেছে সবুজ দলের৷ তারা ভোট পেয়েছে ১২.১ শতাংশ৷ যা গত নির্বাচনের অনুপাতে প্রায় দ্বিগুণ৷
জার্মানির নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যে ম্যার্কেলের দলের বড় ধাক্বা খাওয়ার নেপথ্যে রয়েছে গ্রিসের জন্য বিপুল ঋণে জার্মানির সম্মতি৷ বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷ পরাজয় মেনে নিয়ে সিডিইউ দলের তরফে হেরমান গ্রোহে রবিবার রাতে বলেন, ‘নর্থ রাইন ওয়েল্টফালেন রাজ্যে যন্ত্রনাদায়ক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে সিডিইউ৷ একথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই৷ এর মধ্যে কোন যদি বা কিন্তুও নেই৷ আপাতত সরকার গঠনের ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু করতে হবে৷'
সরকার গঠন নিয়েই এই মুহূর্তে কিছুটা হলেও সংকট দেখা দিয়েছে৷ কারণ, ক্ষমতাসীন সিডিইউ এফডিপি জোট এ রাজ্যে বেকায়দায় পড়ার পর বিরোধী এসপিডি এবারের নির্বাচনে ভালো ফলাফল করা সবুজ দলকে নিয়ে জোট গড়তে পারে এমন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে রবিবারেই৷ সেক্ষেত্রে অবশ্য ৫.৬ শতাংশ ভোট পেয়ে সামনের সারিতে চলে আসা বামপন্থীদেরও সেই জোটে নিতে হতে পারে৷ আবার অন্য একটি হিসেব বলছে, সিডিইউ হয়তো বিরোধী এসপিডি-র সঙ্গে জোট গঠন করে বানাতে পারে গ্র্যান্ড কোয়ালিশন৷ তবে, সেই সম্ভাবনা তেমন জোরদার নয় বলেই মন্তব্য বিশেষজ্ঞ মহলের৷
ওদিকে, জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলিয়ার কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল সিডিইউ-র এই ভরাডুবি এবং ব্যাপক কম মাত্রায় ভোট পাওয়ার বিষয়ে শুরু হয়ে গেছে বিশ্লেষণ৷ বন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যাপক এবং চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের জীবনীকার প্রফেসর গেয়ার্ড ল্যাংগুথ যেমন বলছেন, ‘এই পরাজয় অসম্ভব তিক্ত৷ শুধুমাত্র সিডিইউ-র জন্যই নয়, ম্যার্কেলের জন্যও৷' বস্তুত আঙ্গেলা ম্যার্কেল দ্বিতী দফায় জার্মান চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্বভার নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সমীক্ষার ফলাফল জানিয়ে চলেছে, জনপ্রিয়তা আর গ্রহণযোগ্যতায় ভাটা পড়ছে তাঁর৷ করবৃদ্ধি তো আগেই ছিল ইস্যু, তার ওপর গ্রিসের জন্য বিপুল ঋণের বোঝা জার্মানির ঘাড়ে চড়াটা অনেক জার্মান ভালোভাবে নিতে পারেন নি৷ পরিশেষে নর্থ রাইন ওয়েস্টফালেনের এই নির্বাচনী ফলাফল বুঝিয়ে দিল, এই মুহূর্তে খুব একটা সুসময়ের মধ্যে নেই জার্মান চ্যান্সেলর৷
প্রতিবেদন- সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যয়
সম্পাদনা - রিয়াজুল ইসলাম