ভারতের পরমাণু চুক্তির অনুমোদন দেবে আইএইএ
৩১ জুলাই ২০০৮তবে পর্যবেক্ষকদের আশংকা এমন উদ্যোগ পরমাণু বিস্তারে অন্যদেশগুলোকেও উত্সাহিত করে তুলবে৷
পরমাণু কর্মসূচী পরিদর্শনের এ চুক্তির অনুমোদন দিতে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আইএইএর বোর্ড অব গভর্নরস এর সভা৷ এই চুক্তি চূড়ান্ত হলে পারমাণু বিস্তাররোধের বিভিন্ন নীতির কাছাকাছি ভারতকে নিয়ে আসা হবে৷ তবে এ চুক্তি ভারতের পারমানবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে তেমন প্রভাব ফেলতে পারবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
এর আগে ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের যে পারমাণবিক চুক্তি হয় তার অন্যতম শর্ত ছিলো যে ভারতকে তার পারমাণবিক কর্মসূচী পরিদর্শন করতে আইএইএ কে সুযোগ দিতে হবে৷ এর মাধ্যমে ভারতকে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচী থেকে তার পারমাণবিক শক্তি খাতকে আলাদা করতে হবে৷ এসবের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু রফতানীর আন্তর্জাতিক আইন শিথিল করার চেষ্টা চালাবে যাতে ভারত অন্য দেশ থেকে বেসামরিক পরমাণু প্রযুক্তি অর্জন করতে পারে৷ এ পরিদর্শনের ফলে বিশ্বব্যাপী পরমাণু বিস্তাররোধের কার্যক্রম আরও জোরদার হবে বলে মত দিয়েছেন আইএইএ তে মার্কিন দূত গ্রেগরি স্কাটল৷
তবে বিশেষজ্ঞদের মত কিন্তু ভিন্ন৷ লন্ডন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভারটিক এর গবেষক আন্দ্রেয়াস পার্সবো বলেছেন, যে দেশটির ইতিমধ্যেই পরমাণু অস্ত্র রয়েছে সেখানে এমন পরিদর্শনের অর্থ কি? বিশেষজ্ঞদের আশংকা ভারতের সঙ্গে আইএইএর এমন চুক্তি পাকিস্তান, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার মত দেশগুলোকেও উত্সাহিত করে তুলবে৷ এসব দেশ আইএইএকে তাদের দেশে সীমিত পরিদর্শনের সুযোগ দিতে চাইবে যাতে তারাও অন্য দেশ থেকে আরও বেশী করে পরমাণু প্রযুক্তি অর্জন করতে পারে৷
লন্ডন ভিত্তিক আরও একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইআইএসএস এর কর্মকর্তা মার্ক ফিট্জপ্যাট্রিক জানিয়েছেন, নতুন চুক্তি অনুযায়ী ভারতের ২২টি পরমাণু চুল্লির ১৪টি পরিদর্শনের আওতায় পড়বে৷ তবে পরিদর্শনের আওতায় পড়া ১৪টি চুল্লির কোনটিই পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচীর মধ্যে পড়ে না৷ ইরান যদি কখনো পরমাণু অস্ত্র তৈরী করতে সক্ষম হয় তাহলে তারাও ভারতের রাস্তাই ধরবে বলে মন্তব্য করেছেন ফিট্জপ্যাট্রিক৷
তবে বিশেষজ্ঞদের আশংকাকে সত্য প্রমাণিত করে ইতিমধ্যেই এমন আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে৷ গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহবান জানিয়েছেন যাতে ভারতের মত পাকিস্তানকেও একইভাবে দেখা হয়৷ যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে পাকিস্তানী প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ভারতকে পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে বিবেচনা করতে চায় তাহলে আমরা পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও একইরকম আশা করতে পারি৷
উল্লেখ্য, ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া এবং ইসরায়েলের পরমানু অস্ত্র থাকলেও তারা পরমাণু বিস্তার রোধ চুক্তিতে এখন পর্যন্ত স্বাক্ষর করেনি৷ এর ফলে বেসামরিক ব্যবহারের জন্য পরমাণু প্রযুক্তি আমদানী করা এসব দেশের জন্য অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে৷