ভারতের নির্বাচন
৬ নভেম্বর ২০১৩ভারতে সামনেই পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা ভোট৷ তারপর সংসদীয় নির্বাচন৷ এই ভোট পর্ব নিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যম জনমত সমীক্ষা প্রকাশ করেছে৷ নির্বাচন কমিশন জনমত সমীক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মত জানতে চায়৷ শাসকদল কংগ্রেস সঙ্গে সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা আরোপে সায় দেয়৷ সম্ভাব্য কারণ – জনমত সমীক্ষায় দেখানো হয়েছে যে, শাসকদল কংগ্রেস মোটেই সুবিধা করতে পারবে না৷ এর প্রেক্ষিতে কংগ্রেস ভোটের আগে জনমত সমীক্ষার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে৷ বলেছে, এটা অস্বচ্ছ ও বিজ্ঞানসম্মত নয়, কাজেই এর বিশ্বাসযোগ্যতা নেই৷ এছাড়া এর পেছনে অন্য কারণও কাজ করে৷ শুধু তাই নয়, এভাবে আগাম সমীক্ষা দিয়ে ভোটারদের মনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করাটা অনৈতিক৷ উদাহরণ দিয়ে কংগ্রেস শিবির থেকে বলা হয়, মধ্যপ্রদেশে মোট ভোটার তিন কোটি৷ তার মধ্যে হাজার দুয়েক ভোটারের সঙ্গে কথা বলে কী কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়?
পাল্টা যুক্তি দেখিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলি৷ তাদের মতে, এতে জনগণের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকারকে খর্ব করা হবে, যেটা সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে৷ দ্বিতীয়ত, ভোটারদের মনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ ভিত্তিহীন৷ কারণ, ভারতের ভোটারদের বিচারবুদ্ধিকে খাটো করে দেখা ঠিক নয়৷ জনমত সমীক্ষা ভোটারদের মন বোঝার চেষ্টা করে, তাঁদের মতকে প্রভাবিত করা তার কাজ নয়৷ এর সঙ্গে একমত প্রধান বিরোধীদল বিজেপি এবং অন্যান্য দল৷ বিজেপি মনে করছে, মোদীর পালের ভোটের হাওয়া কেড়ে নিতেই কংগ্রেস জনমত সমীক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষপাতি৷ কারণ, কংগ্রেস এর আগে জনমত সমীক্ষার বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেনি৷ বিরোধীদের অভিযোগ, জনমত সমীক্ষায় যদি কংগ্রেসের জয়ের কথা বলা হতো, তাহলে সম্ভবত নিষেধাজ্ঞা আরোপে কংগ্রেসের আপত্তি থাকতো৷
জনমত সমীক্ষা নিষিদ্ধ হবে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়৷ ২০০৪ সালে নির্বাচন কমিশন এক সর্বদলীয় বৈঠকে এই প্রশ্ন তোলে৷ ২০০৯ সালে জন প্রতিনিধিত্ব আইন সংশোধন করে ভোট পর্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত বুথ-ফেরত সমীক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়৷ ভোটের আগাম পূর্বাভাষ জানা গেলে, রাজনৈতিক সমীকরণের হিসেব নিকেশ আগেভাগেই শুরু হয়ে যায়৷ যদিও জনমত সমীক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়নি৷ পর্যবেক্ষকদের মতে দুটো এক জিনিস নয়৷
জনমত সমীক্ষা বিজ্ঞানসম্মত নয়, এই যুক্তি খণ্ডন করে সেফোলজিস্ট বা ভোট বিশ্লেষকরা বলেন, এটা এক ধরণের বিজ্ঞান যা ভোটের রাজনৈতিক ফলাফল বিশ্লেষণ করে৷