বাঘ সংরক্ষণ
২৮ মে ২০১২ব্যাঘ্র প্রকল্পের সফল রূপায়ণের কৃতিত্বে রাশিয়া ও চীনসহ বিশ্বের ছ'টি দেশ এবার ভারতের সাহায্য চেয়েছে৷ সম্প্রতি দিল্লিতে বসে গ্লোবাল টাইগার রিকভারি প্রোগ্রাম সংক্ষেপে জিটিআরপি'র বৈঠক৷ যাতে যোগ দেয় বাংলাদেশসহ ছ'টি দেশ৷
বাঘ সংরক্ষণে ভারতের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে ভারতের অভিজ্ঞতা ও কর্মকৌশলের সাহায্য চায়, রাশিয়া ও চীনসহ বাংলাদেশ, নেপাল, ভিয়েৎনাম ও মিয়ানমার৷ নেপালছাড়া বাঘের সংখ্যা গণনার টেকনিক্যাল জ্ঞান অন্য কোন দেশের নেই৷ ২০০৪ সালে অবশ্য ভারত-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে বাঘের সংখ্যা গণনা করা হয়েছিল বাঘের পায়ের ছাপের ভিত্তিতে৷ তাতে দেখা গেছে বাংলাদেশের সুন্দরবন এলাকায় বাঘের সংখ্যা ৪১৯৷ কিন্তু অনেকে এর নির্ভুলতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন৷ তাদের মতে, সংখ্যাটা হতে পারে ৩০০ থেকে ৫০০৷
১৯৭০ থেকে ভারতে বাঘ সংরক্ষণ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন হয়ে আসছে - বলেন জাতীয় বাঘ সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ এনটিসিএর সদস্য সচিব রাজেশ গোপাল৷ ভারত বাঘ সংরক্ষণে অন্য দেশগুলিকে সাহায্য করবে যাতে বাঘের মত বিপন্ন প্রজাতির জীব সংরক্ষণে ভারত অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারে৷
ভারতে বাঘের সংখ্যা বর্তমানে ১৭০৬৷ অর্থাৎ, বিশ্বে সবথেকে বেশি৷ এর কৃতিত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের টাইগার প্রকল্পের৷ ভারতে বাঘের গতিবিধি ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে নজর রাখা হয়৷ বনকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয় এবং চোরা শিকার প্রতিরোধে বিশেষ কর্মকৌশল প্রয়োগ করা হয়৷
এই প্রকল্পের গুরুত্বের প্রেক্ষিতে ২০০৬'এ, গঠিত হয় জাতীয় বাঘ সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ নামে পৃথক একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা৷ এজন্য পৃথক অর্থ বরাদ্দের সংস্থান রাখা হয়৷ এক্ষেত্রে ভারতের সাফল্যে আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল টাইগার ফোরামের শীর্ষে আছে ভারতের নাম৷ বাঘ সংরক্ষণে আগ্রহী দেশগুলি এই সংস্থার সদস্য৷
বাঘ সংরক্ষণ জরুরি কেন? সুস্থ ইকো-সিস্টেম গড়ে তোলা৷ বাঘ সংরক্ষিত হলে অরণ্য সুরক্ষিত থাকবে, খাদ্য শৃঙ্খলা বজায় থাকবে৷ কিন্ত কীভাবে তা করা সম্ভব ? চোরা শিকার রোধ করে, বাঘের আবাস স্থান সুরক্ষিত রেখে, বাঘের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করে, মানুষ ও পশুর সংঘাত কমিয়ে এবং বাঘ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে গণসচেতনতা বাড়িয়ে৷ জলবায়ু পরিবর্তনও বাঘের আবাস ভূমি সুন্দরবনের ওপর প্রভাব ফেলছে ৷ বৃষ্টির প্রকৃতি পালটাচ্ছে৷ জলে লবনাক্ততা বাড়ছে৷ সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে৷ এমনদিন আসতে পারে, সুন্দরবনের অর্ধেক ডুবে যাবে লবনাক্ত জলে৷ আগাম ব্যবস্থা নেয়া না হলে, একদিন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বংশ৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ