ভারত-ইসরায়েল সম্পর্ক কেমন?
আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার স্বার্থে প্রথম দিকে ইসরায়েলের সঙ্গে পরোক্ষ সম্পর্ক বজায় রাখত ভারত৷ পরে ১৯৯২ সালে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে৷
১৯৪৭
১৯৪৭ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনি এলাকা ভাগের প্রস্তাব দিয়েছিল৷ সাধারণ পরিষদে সেটি পাসও হয়৷ তবে আরব রাষ্ট্রগুলোসহ ভারত সেই প্রস্তাবে সমর্থন জানায়নি৷ ছবিতে সেই সময়কার আরব নেতাদের দেখা যাচ্ছে৷
১৯৪৯
ইসরায়েলকে জাতিসংঘের সদস্য করার বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল ভারত৷ তবে ডানপন্থি হিন্দু জাতীয়বাদী দল ‘হিন্দু মহাসভা’র নেতা বিনায়ক দামোদর সাভারকর ইসরায়েলের বিপক্ষে ভোট দেয়ার সমালোচনা করেছিলেন৷
১৯৫০
১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইসরায়েল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয় ভারত৷ এরপর প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু বলেছিলেন, ‘‘আমরা আরও আগেই ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতাম, কারণ ইসরায়েল একটি বাস্তবতা৷ কিন্তু আমরা আরব রাষ্ট্রের বন্ধুদের কষ্ট দিতে চাইনি বলে, তা (ইসরায়েলকে স্বীকৃতি) করিনি৷’’
১৯৫৩
মুম্বইতে ইসরায়েলের একটি কনসুলেট খোলার অনুমতি দেয় ভারত৷ কিন্তু আরব বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে ভেবে ইসরায়েলের সঙ্গে পরিপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়নি নেহেরু সরকার৷
১৯৬২
ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র চেয়ে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ডাভিড বেন গুরিয়নের (ছবি) কাছে চিঠি লিখেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু৷
১৯৭১
ভারতীয় পত্রিকা হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে লড়তে অস্ত্র চেয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ারের কাছে চিঠি লিখেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী৷ সেই অস্ত্র ভারতীয় সৈন্য ও মুক্তি বাহিনী ব্যবহার করেছিল বলে জানায় পত্রিকাটি৷ এরপর মেয়ার গান্ধীর কাছে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন৷ তবে গান্ধী তা মেনে নেননি৷
১৯৮৫
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী শিমন পেরেজের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়৷ সেটিই দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছিল৷
১৯৯২
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাওয়ের সময় ভারত ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়৷ ফেব্রুয়ারি মাসে ইসরায়েল ভারতের নতুনদিল্লিতে দূতাবাস খোলে৷ আর মে মাসে ইসরায়েলের তেল আভিভে দূতাবাস খোলে ভারত৷
১৯৯৬
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট এজার ভাইৎসমান ভারত সফরে গিয়েছিলেন৷ ইসরায়েলের কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের এটিই প্রথম ভারত সফর ছিল৷
১৯৯৯
কারগিল যুদ্ধের সময় ভারতকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল ইসরায়েল৷
২০০০
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এলকে আডভানি তেল আভিভে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট এজার ভাইৎসমানের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ নিয়ে বৈঠক করেন৷ এরপর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জসওয়ান্ত সিংয়ের সফরের সময় দুই দেশ যৌথভাবে সন্ত্রাসবিরোধী কমিশন গঠন করেছিল৷
২০০৩
ইসরায়েলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারত সফরে গিয়েছিলেন আরিয়েল শ্যারন৷ সেই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী৷
২০১৪
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গিয়ে বৈঠক করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু৷
২০১৫
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে ইসরায়েলের বিপক্ষে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে ভারত৷ এর মাধ্যমে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব নিয়ে ভারতের নীতিতে পরিবর্তন আসার সংকেত দেয়া হয়৷ একই বছর ইসরায়েল সফরে যান ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি৷
২০১৭
ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইসরায়েল সফরে যান নরেন্দ্র মোদি৷ সেখানে তিনদিন ছিলেন তিনি৷
২০১৭
জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিরুদ্ধে ভোট দেয় ভারত৷
২০১৮
মোদির ইসরায়েল সফরের ছয় মাস পর ভারত সফরে যান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু৷
২০১৯
প্রথম ফেব্রুয়ারি, পরে সেপ্টেম্বরে ভারত সফরে যাওয়ার কথা ছিল নেতানিয়াহুর৷ তবে দুবারই দেশে নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সফর বাতিল করতে হয়েছে৷ তবে বন্ধু দিবসে একে অপরের সঙ্গে টুইটারে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন মোদি ও নেতানিয়াহু৷