ভারত-চীন সম্পর্ক
৪ সেপ্টেম্বর ২০১২পাঁচদিনের সফরে ভারতে এসে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিয়াং গুয়াংলি এবং ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনির মধ্যে প্রতিনিধি স্তরে আলোচনায় স্থির হয় দুদেশের মধ্যে ফের সামরিক মহড়া শুরু হবে, যা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ২০১০ সালে নর্দান কমান্ডের প্রধান জম্মু-কাশ্মীরের লেফট্যানেন্ট জেনারেল যশওয়াল এবং অরুণাচল প্রদেশের বিমানবাহিনীর অফিসারকে ভিসা দিতে চীন অস্বীকার করার ঘটনায়৷
বৈঠক শেষে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি বলেন, আগামী বছর চীনে এবং তার পরের বছর ভারতে এই যৌথ মহড়া হবে৷ অ্যান্টনি চীন সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন৷ আগামী বছর যাবেন৷ চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুয়াংলি পারস্পরিক অনেক ইস্যুতে ঐকমত্য হবার কথা বলেন৷ ভারত সীমান্তের কাছে চীনের সামরিক অবকাঠামো নির্মাণে ভারতে উদ্বেগ প্রসঙ্গে তিনি সেই আশঙ্কা নিরসন করে পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝি দূর করার ওপর জোর দেন৷
স্ট্র্যাটিজিক বিশ্লেষক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া সফরকে সামরিক কূটনীতি আখ্যা দিয়ে বলেন, ইদানিং চীন ক্রমশই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে৷ আসিয়ান সম্মেলনে চীন কার্যত একঘরে৷ ফিলিপিনস, ভিয়েতনাম, জাপানের সঙ্গে ভূখণ্ড নিয়ে চলছে আঞ্চলিক বিবাদ৷ অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর জাপান ও ভারতকে নিয়ে একটা আঁতাত গড়ে তুলতে সক্রিয় অ্যামেরিকা৷ তাতে চিন্তিত চীন৷ পাশাপাশি ভারতের চীন নীতি ক্রমশই কড়া করছে৷ তাতে এই মুহূর্তে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়িয়ে সুবিধা হবেনা৷
এক কথায়, সামরিক কূটনীতি কাজে লাগিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পরিসর বাড়াতে চাইছে চীন৷ বিতর্কিত আঞ্চলিক ভূখণ্ডের দাবিতে কোনরকম ছাড় না দিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলির সন্দেহ, অবিশ্বাস দূর করে ভুল বোঝাবুঝির জায়গাটা কীভাবে ন্যূনতম করা যায়, সেটাই চীনের মূল লক্ষ্য৷ এর প্রেক্ষিতে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে কোন চীনা সৈন্য নেই বলে গুয়াংলির মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, যেটা নিয়ে ভারত ঘোর সন্দেহ পোষণ করে৷
মঙ্গলবার অপরাহ্ণে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিলিত হন ভারতের চিফ অফ স্টাফ এন এ কে ব্রাউনির সঙ্গে৷ পরে তিনি সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর সঙ্গে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন