ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক
১৩ এপ্রিল ২০১২ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের এখন ধাপে ধাপে এগিয়ে চলেছে৷ শুরুটা হয়েছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে৷ দু'দেশের ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসার নিয়ম আরো উদার করার উদ্দেশ্যে উভয়দেশ শীঘ্রই চুক্তি সই করতে যাচ্ছে৷ এতে ভারত ও পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের দেয়া হবে এক বছরের ‘মাল্টিপল ভিসা' এবং ১০টি শহরে তাঁরা যেতে পারবেন বিনা বাধায়৷ আগে তাঁদের একটিমাত্র শহরে বসেই কাজ সারতে হতো৷
আজ পাঞ্জাবে আটারি-ওয়াঘা সীমান্তে সম্প্রসারিত ও সুসংহত চেকপোস্টের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি.চিদাম্বরম৷ আগে সীমান্ত চেকপোস্টে সীমাশুল্ক নিয়ে যে বিলম্ব এবং প্রকরণগত যে অসুবিধা হতো, তা দূর করতে বিরোধ নিষ্পত্তি সংস্থা গঠন করা হচ্ছে৷ এই চেকপোস্ট দিয়ে দৈনিক ৬০০ মালবাহী ট্রাক দু'দেশে যাতায়াত করতে পারবে৷ এর আগে পর্যন্ত যেতে পারতো মাত্র ১৫০টি ট্রাক৷
আরো একটি বড় পদক্ষেপ হলো, পাকিস্তানকে ভারতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের অনুমতি দেবার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা আজ একথা ঘোষণা করেন৷ আগে কোনো পাকিস্তানি সরাসরি ভারতে বিনিয়োগ করতে পারতো না৷ স্বাভাবিকভাবেই, উভয়দেশই এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে৷ সম্প্রতি পাকিস্তান ভারতকে সবথেকে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের মর্যাদা দেয়ায়, দু'দেশের ব্যবসা বাণিজ্যে যুক্ত হয়েছে নতুন এক মাত্রা৷
কিন্তু প্রশ্ন হলো, জারদারির দরগা কূটনীতিতে সম্পর্কের যে বরফ গলতে শুরু করেছে তার ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে তো? ডয়চে ভেলেকে উত্তরটা দিলেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক সব্যসাচি বসু রায়চৌধুরি৷ বললেন, থাকার সম্ভাবনা বেশি৷ আগে বরাবরই ভারত-পাক সম্পর্কে ছিল একটা টানাপোড়েন৷ এবারে একটা নতুনত্ব দেখা যাচ্ছে৷ পাকিস্তানে গণতন্ত্রের ভিত আগের তুলনায় বেশ খানিকটা মজবুত৷ এছাড়া, পাকিস্তানের মাটিতে জঙ্গি কার্যকলাপ মোকাবিলায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ভূমিকায় সেদেশের মানুষ খুশি নয়৷ তবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে যে পরিবর্তন, তার প্রেক্ষিতে দু'দেশের সম্পর্কে বেশ কিছুটা আশার জায়গা আছে৷
অধ্যাপক বসু রায়চৌধুরির মতে রাজনৈতিক সমস্যা মেটাবার জন্য অপেক্ষা না করে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বন্ধ রাখা আজকের বিশ্বে বোধহয় সম্ভব নয়৷ সেটা ভারত ও পাকিস্তানের নেতারা সম্ভবত বুঝতে পেরেছেন৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ