ভূমিকম্পে উদ্ধার-কাজে কুকুরের পরিবর্তে রোবট?
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত দেশ দুটিতে উদ্ধারকারীরা এখনো যারা বেঁচে আছেন, তাদের উদ্ধারের জন্য দিন-রাত কাজ করছে৷ তারপরও জীবিতদের সবাইকে উদ্ধারের সম্ভাবনা দিনে দিনে কমছে৷
বিভিন্নভাবে ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া জীবিত ব্যাক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে৷ যেখানে জীবিত মানুষ পাওয়ার সম্ভাবনা, উদ্ধারকারীরা সেখানে সরাসরি তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন৷ চিৎকার করে অবস্থান জানানোর পাশাপাশি মোবাইল ফোন থেকে পরিবারের সদস্যদের বার্তা দেয়ারও অনুরোধ করছেন উদ্ধারকারীরা৷
তবে এ ধরনের উদ্ধার তৎপরতায় সাধারণত আধুনিক যন্ত্রপাতির উপর নির্ভর করতে হয়৷ নতুন নতুন অনেক সরঞ্জাম যুক্ত হচ্ছে উদ্ধার কাজে৷
গত মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক প্রকল্পের আওতায় ধ্বংসস্তূপ থেকে মানুষ উদ্ধারে রোবট ও ড্রোন ব্যবহারের কথা জানিয়েছে৷
অনুসন্ধান অভিযানে রোবোটিক সরঞ্জাম ও উন্নত সেন্সর সমন্বিত ইনফ্রারেড এবং থার্মাল ক্যামেরার মাধ্যমে ধ্বংসস্তূপের মাঝে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং মানুষের প্রোটিন বাতাসে পরীক্ষা করা হবে৷ ফলে জীবিত কেউ থাকলে তা জানা সম্ভব হবে৷ এরপর উদ্ধারকারীরা লাউডস্পিকার এবং মাইক্রোফোনের সাহায্যে সম্ভাব্য বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করবেন৷ এ ক্ষেত্রে জীবিত ব্যক্তির অবস্থান নির্ণয়ে ড্রোনের নেয়া থ্রি-ডি চিত্র কাজে আসবে৷
‘‘জীবিতদের অনুসন্ধান উদ্ধারকারী দলের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক,” কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও রাইনল্যান্ড-পালাটিনেট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব কাইজারস্লটার্ন-লান্ডাউয়ের রোবোটিক সিস্টেম চেয়ারের প্রধান কার্স্টেন বার্নস জানান৷
বার্নস রোবট ভূমিকম্পে উদ্ধারের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ৷ ২০১৬ সালে তার দল ইইউ'র একটি প্রকল্পের সাথে জড়িত ছিল৷
তার মতে, বৃহৎ আকারের রোবট আটকে পড়া মানুষদের ত্রান পৌঁছে দেয়া ছাড়াও ভেঙে পড়া ভবনের বড় অংশ বিশেষ সরিয়ে ফেলতে সক্ষম৷ ধসে পড়া ভবনের যেখানে ক্ষতিগ্রস্থ গ্যাস পাইপ থেকে বিস্ফোরণের ঝুঁকি আছে রোবটগুলো সেখানে ঢুকেও কাজ করতে পারে৷
দুটি প্রকল্পের আওতায় কিছু রোবটের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে৷ এর ফলে ভবিষ্যতে ভূমিকম্পে উদ্ধার-কাজে রোবট ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে৷
তবে সত্যিকার ভূমিকম্পের উদ্ধারে রোবট এখনো ব্যবহৃত হয়নি৷ এছাড়াও ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপে ব্যবহার করতে হলে নতুন করে রোবট তৈরি করতে হবে, যা অনেক ব্যয়বহুল৷ এ কারণে সিরিয়া ও তুরস্কের উদ্ধার তৎপরতায় এগুলো ব্যবহার করার কোনো সম্বাভনা নাই৷ তাই আপাতত উদ্ধারকারী কুকুরের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে৷
কার্লা ব্লাইকার/একেএ