মঙ্গলগ্রহের পথে বাক্সবন্দি ছয়জন
১৮ আগস্ট ২০১০বাক্সবন্দি ছয়জনের মধ্যে তিনজন রুশ, একজন ইটালিয়, একজন চীনা এবং একজন ফরাসি নাগরিক৷ কী করছেন তারা? যাচ্ছেন মঙ্গলগ্রহে৷ বিশ্বাস হচ্ছে না? এরই মধ্যে তাঁরা ঐ বাক্সে অর্থাৎ ক্যাপসুলে অতিবাহিত করেছেন দুই মাস৷ তাঁদের এই ফ্লাইট মঙ্গলগ্রহে যাবে আবার ফিরেও আসবে৷
পুরো মিশনটি ৫২০ দিনের৷ কারণ মঙ্গলগ্রহে গিয়ে আবার পৃথিবীতে ফিরে আসতে সময় লাগে প্রায় ১৫ মাস৷ এখনও পর্যন্ত ছয়জন অভিযাত্রীর কেউই এই যাত্রা ক্লান্তিকর লাগছে বলে অভিযোগ তোলেনি৷ জার্মান বিমানচালনা এবং মহাকাশ এজেন্সির প্রধান পেটার গ্রাফ বলেছেন, ছয়জন অভিযাত্রীর কেউই বের হয়ে যেতেও চাননি৷
জানা গেছে, ছয়জনই তাঁদের মানসিক সহ্যক্ষমতা, নিয়ম এবং উন্নয়ন পরীক্ষা দিতে এখনও উৎসর্গিমনা৷ ইটালিয়ান অভিযাত্রী দিয়েগো উরবিনা টুইটারে লিখেছেন, তিনি এখনও ক্যাপসুলের বাইরের লোকজন নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন৷
নুরেমব্যার্গের এরলাঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেডিক্যাল গবেষক ইয়েনস টিটসে৷ তিনি বলেন, যেভাবে এই ছেলেগুলো এই মিশনে অংশ নিচ্ছে, তা আসলে তুলনাহীন৷ গবেষক টিটসে এবং তাঁর দল আগে থেকেই এই মিশনের খাবার তৈরির পরিকল্পনায় ছিলেন৷ তিনি বলেন, আশা করা হচ্ছে মেন্যুতে যা আছে, তাই তাঁরা খাচ্ছেন৷
জার্মান সেনাবাহিনীর ক্যাপটেন অলিভার ভিকেল মস্কোতে পরীক্ষামূলক ক্যাপসুল পর্যবেক্ষণ মিশনে ১০৫ দিন অতিবাহিত করেছেন৷ তিনি মার্স ফাইভ হান্ড্রেড প্রকল্পকে মহাকাশ উড্ডয়নের ইতিহাসের সবচেয়ে জটিল পরীক্ষা বলে অতিবাহিত করেছেন৷ কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, পরবর্তী ৪৫০ দিন ঐ ছয়জন অভিযাত্রীর জন্যে অনিশ্চিত৷
মানসিক এবং শারীরিক পরীক্ষা-নিরিক্ষা প্রথম কয়েকমাস ক্যাপসুলের ক্রুদেরকে ব্যস্ত রাখবে৷ ইউরোপীয় মহাকাশ এজেন্সির ওয়েব সাইটে ফরাসি অভিযাত্রী রোমেইন চার্লস লিখেছেন, মিশনে ঘুম থেকে ওঠার পরে নাস্তার আগেই প্রত্যেককে চার থেকে পাঁচটি নির্ধারিত কাজ শেষ করতে হবে৷ চীনা অভিযাত্রী ওয়াং উয়ে লিখেছেন, মহাকাশ অভিযাত্রীদের জন্যে অলস সময় খুব কমই রয়েছে, তবে যা আছে তা তাঁরা খুব ভালো ভাবেই ব্যবহার করছেন৷ যেমন উয়ে চার্লসকে জটিল চীনা লিপি লিখতে শেখাচ্ছেন৷ মিশনে সম্প্রতি চার্লস তাঁর জন্মদিনও পালন করেছেন৷ মস্কো থেকে বন্ধুদের টেলিফোন শুভেচ্ছাও পেয়েছেন৷ তবে তা আর সম্ভব নয়, কেননা মহাকাশ যানটি পৃথিবী ছেড়ে এখন অনেক দূরে চলে গেছে৷
প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ