মনমোহন সরকারকে উইকিলিকস-এর কোমরভাঙ্গা ধাক্কা
১৭ মার্চ ২০১১ভারত-মার্কিন অসামরিক পরমাণু চুক্তি নিয়ে ২০০৮ সালে বামদল সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নিলে তৎকালীন মনমোহন সিং-এর কংগ্রেস জোট সরকারকে সংসদের আস্থা ভোট নিতে হয়৷ সেজন্য কিছু সাংসদের ভোট পেতে তাঁদের ঘুষ দেয়া হয়৷ এমনটাই নাকি নতুনদিল্লির মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মীকে বলেছিলেন কংগ্রেস নেতা সতীশ শর্মার রাজনৈতিক সচিব নচিকেতা কাপূর৷ এই মর্মে মার্কিন দূতাবাস ও তার সরকারের মধ্যে যে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় বার্তা বিনিময় হয়েছিল, উইকিলিকস তা ফাঁস করে দিলে তা নিয়ে আজ সংসদের উভয়সভা উত্তাল হয়ে ওঠে৷ বিরোধীপক্ষ একযোগে মনমোহন সিং সকারের পদত্যাগ দাবি করেন৷ বামদল এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতিও চায়৷
সতীশ শর্মা এবং নচিকেতা কাপূর অভিযোগ অস্বীকার করেন৷ টাকা দিয়ে যে-তিনজন সাংসদের ভোট কেনা হয়েছিল বলে অভিযোগ, তাঁরা ছিলেন অজিত সিং-এর আরএলডি দলের৷ অজিত সিং এই অভিযোগ খারিজ করে বলেন,তাঁর দলের সাংসদরা সরকারের বিপক্ষেই ভোট দিয়েছিলেন৷
সরকারের পক্ষে বক্তব্য রেখে অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেন, আগের চতুর্দশ সংসদে যা হয়েছিল এখনকার পঞ্চদশ সংসদে তা নিয়ে আলোচনা সম্ভব নয়৷ দ্বিতীয়ত, মার্কিন দূতাবাস ও তার সরকারের মধ্যে কী বার্তা বিনিময় হয়েছিল কূটনৈতিক রক্ষাকবচের দরুণ তা সরকার পেতে পারেনা৷ তৃতীয়ত,উইকিলিকস-এর তথ্য দেশের কোন আদালতে আইনি নথি হিসেবে গ্রাহ্য হয়না৷
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, একের পর এক কেলেঙ্কারিতে মনমোহন সিং সরকার যেভাবে ধাক্কা খাচ্ছে তাতে উইকিলিকস তথ্য ফাঁস হওয়াটা যেন কোমরভাঙ্গা ধাক্কা৷
অন্যদিকে, টু-জি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারির প্রধান আসামি প্রাক্তন টেলিকমমন্ত্রী এ.রাজার সহযোগী সাদিক বাটছা গতকাল আত্মহত্যা করেন৷ টেলিকম কেলেঙ্কারিতে তাঁরও নাকি বড় ভূমিকা ছিল বলে তদন্তকারী এজেন্সির সন্দেহ৷ রাজার হয়ে তিনিই নাকি কাজ করতেন৷ বাটছাকে এনিয়ে কয়েকবার জেরা করা হয়৷তাঁর অফিস ও বাড়িতে হানা দেয় তদন্ত সংস্থা৷ অনুমান, তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দিতেই নাকি তিনি আত্মহত্যা করেছেন৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়