মাওবাদী নেতার আত্মসমর্পণ
১২ মার্চ ২০১২আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী নেত্রী সুচিত্রা মাহাতর সংক্ষিপ্ত এই বক্তব্য শেষ হতে না হতেই অসংখ্য প্রশ্ন নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল সংবাদমাধ্যম৷ দৃশ্যতই বিব্রত সুচিত্রা, অস্বস্তিতে পুলিশ কর্তারা এবং বেশ অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কারণ অধিকাংশ প্রশ্নই ইঙ্গিত করছে, সাংবাদিকরা সন্দেহ করছেন, এই আত্মসমর্পণ প্রশাসনের সাজানো৷ সুচিত্রা সম্ভবত বুড়িশোলের জঙ্গলে গত নভেম্বরের সেই সঙ্ঘর্ষের পর থেকেই পুলিশের হেফাজতে আছেন৷
এই বিতর্ককে আরও উস্কে দিল বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রর বক্তব্য, যিনি সরাসরি বললেন, গোটাটাই নাটক৷
একটা সময় যদিও পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদীদের প্রথম সারির নেতাদের অন্যতম সুচিত্রা নিজে একাধিক নাশকতা-হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন৷ তার বিরুদ্ধে থাকা সেইসব পুরনো মামলা সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ অভয় দিয়েছেন, সুচিত্রাদের নিরাপত্তা দেওয়ার৷
কিন্তু এখানেও একটি বিতর্কিত প্রসঙ্গ উঠেছে যে, বুড়িশোলের সঙ্ঘর্ষের পর গুলিবিদ্ধ সুচিত্রাকে পালাতে সাহায্য করা এবং তাঁর চিকিৎসা করার অপরাধে যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের তা হলে এখনও বন্দি রাখা হয়েছে কেন৷ অন্যদিকে এমন সন্দেহও প্রকাশ পেয়েছে যে, তা হলে কি সুচিত্রার সঙ্গে যোগসাজশেই কিষেনজিকে শেষ পর্যন্ত ঘায়েল করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী৷
তবে সুচিত্রার আত্মসমর্পণের ঘটনা নিঃসন্দেহে জঙ্গলমহলে প্রশাসনের অবস্থানকে কিছুটা বাড়তি জমি দিল, যাঁর উপর দাঁড়িয়ে বাকি মাওবাদীদেরও অস্ত্র ফেলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
মাওবাদীরা সেই আবেদনে যদি সাড়া দেন, তা হলে সেটা হবে সরকারের এক বড় সাফল্য যা সুচিত্রা মাহাতর এই আত্মসমর্পণকে যৌক্তিকতা দেবে৷
প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়