মহাকাশে চুল ধোয়ার মহড়া
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪নিজের হেয়ারস্টাইল, শিশুকন্যার ভবিষ্যৎ – এমন সব বিষয়ের ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে ৩৮ বছর বয়স্ক মহাকাশ বিজ্ঞানী ইয়েলেনাকে৷ কারণ তিনি একজন নারী৷ গত প্রায় সাত বছর ধরে মহাকাশ যাত্রার অনুশীলন করে চলেছেন তিনি৷ স্বামীও প্রাক্তন ‘ট্রেনি কসমোনট'৷ তাঁদের কন্যাসন্তানের বয়স ১১৷ প্রশ্ন উঠেছে, সে কি মা-কে ছেড়ে এতদিন থাকতে পারবে? মহাকাশে গেলে তাঁর লম্বা কালো চুল কীভাবে ধোবেন, তাও ‘ডেমনস্ট্রেট' করতে প্রস্তুত ছিলেন ইয়েলেনা৷ শুধু মুচকি হেসে বলেছিলেন, ‘‘আপনারা আমার সহকর্মী পুরুষ কসমোনটের হেয়ারস্টাইল নিয়ে আগ্রহী নন?''
অথচ সোভিয়েত ইউনিয়নই ১৯৬৩ সালে প্রথম নারীকে মহাকাশে পাঠিয়েছিল৷ ফলে ভালেন্টিনা টেরেশকভা গোটা বিশ্বে বিখ্যাত হয়ে পড়েন৷ কিন্তু তার পরে মাত্র দু'জন নারী এই গৌরব অর্জন করতে পেরেছেন৷ ইয়েলেনা চতুর্থ নারী, যিনি এই সুযোগ পাচ্ছেন৷
শুধু পৃথিবীতে নয়, মহাকাশেও পুরুষদের একচেটিয়া আধিপত্যের পেছনে নানা যুক্তি দেখানো হয়েছে৷ বলা হয়েছে, মহাকাশে যেতে হলে ও সেখানে কাজ করতে গেলে পেশিশক্তির প্রয়োজন৷ দৈহিক বল ছাড়া চলবে না৷ ‘অবলা নারী'-রা সেখানে আর কী করবে! তার উপর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে সামরিক বাহিনীই মহাকাশ যাত্রার নিয়ন্ত্রণ করতো৷
রাশিয়ার ‘স্পেস নিউজ' পত্রিকার সম্পাদক ইগর মারিনিন সংবাদ সংস্থা এএফপি-র সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এই মানসিকতার বিষয়টি সম্পর্কে আরও কিছু মন্তব্য করেছেন৷ তাঁর মতে, রাশিয়ার ভাবমূর্তির স্বার্থে মহাকাশে নারীদের প্রতি বৈষম্যের সময় শেষ করার সময় এসে গেছে৷ রুশ মহাকাশ সংস্থার প্রধান নিজে ইয়েলেনা সেরোভা-কে বাছাই করেছেন৷ তবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন আইএসএস-এও নারী-পুরুষের ভারসাম্য নেই৷ ইগর আরও বলেন, প্রায় ছয় মাস ধরে সেখানে পাঁচজন পুরুষ ছোট জায়গায় এক আকর্ষণীয় নারীর সঙ্গে সময় কাটাবেন – এটা চিন্তার বিষয় বৈকি৷
এসবি/ডিজি (এএফপি)