1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিপন্ন কক্ষপথ

৫ জুলাই ২০১৩

পৃথিবীর কক্ষপথে আবর্জনা দূর করতে এক প্রকল্প হাতে নিয়েছে জার্মান এয়ারোস্পেস সেন্টার ডিএলআর৷ অদূর ভবিষ্যতে তাদের রোবোট এই অসাধ্য সাধন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/18z7N
ছবি: picture-alliance/dpa

পৃথিবীর উপর মহাকাশে চারিদিক ভরে গেছে আবর্জনায়৷ সংখ্যাটা প্রায় ২০ কোটি৷ পৃথিবীর কক্ষপথে যেখানে টেলিকমিউনিকেশন স্যাটেলাইট থাকে এবং ভূ-পৃষ্ঠের কাছেই অংশেই এগুলির সংখ্যা বেশি৷ তাদের গতি অবিশ্বাস্য রকম দ্রুত হওয়ায় বিশাল বিপদের আশঙ্কা থেকে যায়৷ জার্মান এয়ারোস্পেস সেন্টারের হাউকে ফিডলার বলেন, ‘‘মানুষের হাতের মুঠোর মতো ছোট্ট একটা টুকরোও যদি স্যাটেলাইটকে ধাক্কা মারে, সেটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে৷ ঘণ্টায় কয়েকশো কিলোমিটার বেগে একটা গাড়ি ধেয়ে এলে যা হয়, মহাকাশে ছোট্ট টুকরোও সেই ক্ষমতা রাখে৷''

বিকল স্যাটেলাইট ও রকেটের ভাঙা অংশই হলো আসল সমস্যা৷ ২০০৯ সালে মহাকাশে রাশিয়া ও অ্যামেরিকার দুই স্যাটেলাইটের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটেছিল৷ তাদের ভাঙা টুকরোগুলি মেঘের মতো গোটা বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়েছিল৷ ফলে আরও এমন দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছিল৷ তাই জার্মান এয়ারোস্পেস সেন্টারের গবেষকরা এমন আবর্জনা সাফাই করতে চান৷ কক্ষপথে এই অভিযানের পোশাকি নাম ‘ডেয়স'৷

Upperstage explosion H1
পৃথিবীর কক্ষপথ বেশ বিপজ্জনক জায়গাছবি: ESA

এ যেন এক সাফাই কর্মী, যিনি পুরানো স্যাটেসাইট ধরে, তাতে জ্বালানি ভরে আবার মহাকাশে ছেড়ে দেবেন৷ অথবা বিকল স্যাটেলাইট পৃথিবীর দিকে ঠেলে দেবেন, যাতে সেটি বায়ুমণ্ডলের ঘর্ষণে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়৷

ইঞ্জিনিয়াররা গবেষণাগারে বিকল স্যাটেলাইট-এর কাছে এগোনোর পদ্ধতি পরীক্ষা করছেন৷ তবে কাছে যাওয়ার আগে তাদের এমন সব তথ্যের প্রয়োজন, যা শুধু ঘটনাস্থলে গিয়েই সংগ্রহ করা সম্ভব৷ সাফাইয়ের আগে এটাই প্রথম পদক্ষেপ৷ ডিএলআর-এর হাউকে ফিডলার বলেন, ‘‘প্রথমে ছবি তুলে দেখতে হবে স্যাটেলাইট সোজা এগোচ্ছে নাকি মাতালের মতো টলছে? কোন দিকে ঘুরছে? ঘোরার অক্ষই বা কী? এবার হাত বাড়িয়ে সেটিকে ধরতে চাইলে জানতে হবে, ঠিক কোন অংশ ধরা যায় – বা আদৌ ধরা সম্ভব কি না৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্যাটেলাইটের নক্সাও পাওয়া যায় না৷''

মহাকাশে কোনো কিছু ধরার পরীক্ষা চলছে৷ মাধ্যাকর্ষণহীন অবস্থায় রোবোটের হাত সামান্য এদিক-ওদিক হলেই স্যাটেলাইট টলে যেতে পারে৷ ইঞ্জিনিয়াররা এখানে সেই জটিল প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য কম্পিউটার প্রোগ্রাম তৈরি করতে পারেন, পরীক্ষাও চালাতে পারেন৷ গোটা বিশ্বে অন্য কোথাও এমন উচ্চ পর্যায়ের গবেষণার সুযোগ নেই৷ প্রথমে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে রোবোট নিয়ন্ত্রণ করতে হবে৷ ডিএলআর-এর জর্ডি আর্টিগাস বলেন, ‘‘প্রথমে রোবোটের হাত ও বিকল স্যাটেলাইটের মধ্যে যোগাযোগের তথ্য পৃথিবীতে পাঠানো হয়৷ সেই তথ্যের ভিত্তিতে অপারেটর রোবোটকে পরিচালনা করেন৷''

বছর চারেকের মধ্যেই মহাকাশে জঞ্জাল সাফাইয়ের প্রথম অভিযান শুরু হতে পারে৷ তবে তার শর্ত হলো, যে সব দেশ বড় আকারের মহাকাশ অভিযান চালায়, তাদের সেই ব্যয় বহন করতে হবে৷

এসবি/ডিজি