মানবাধিকার এবং ফতোয়া
৭ জুলাই ২০১১বিভিন্ন ধরণের ফতোয়াকে অবৈধ ঘোষণা করে গত বছর আইন জারি করা হলেও বাস্তবে তার কোন প্রতিফলন নেই৷ মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, বাংলাদেশে মহিলাদের বিভিন্ন অধিকার আদায় করতে সরকারের আরো যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত৷ গত বছরের জুলাই মাসে ঢাকায় হাই কোর্ট বিভিন্ন ধরণের ফতোয়াকে অবৈধ ঘোষণা করলেও বাস্তবে এর কোন প্রতিফলন নেই৷
এর প্রমাণ মেলে এ বছরের শুরুতে শরিয়তপুরে হেনা আক্তারের ঘটনায়৷ তাকে অবৈধ প্রেমের অভিযোগে স্থানীয় ফতোয়াবাজরা দোররা মারার সিদ্ধান্ত নেয়৷ যদিও হেনা আক্তার সবসময়ই বলে আসছিল তাকে দিয়ে জোর করে সব করানো হয়েছে, সে নির্দোষ – কিন্তু কেউই তার কথা শোনেনি৷ ফলে জীবন দিতে হয়েছে হেনা আক্তারকে৷ হেনা আক্তারের মৃত্যুর পরপরই শরিয়তপুরে আরো তিনজন মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানায়৷
আইন ও শালিশ কেন্দ্র, ব্লাস্ট, ব্র্যাক মানবাধিকার সংস্থা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এবং নিজেরা করি – সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে৷ তারা সরকারের ব্যর্থতাকে চ্যালেঞ্জ করেছে৷ যেসব আইন বহির্ভূত বিচার কার্য বিভিন্ন গ্রামে চলছে তার যথার্থ জবাব দাবি করে সংস্থাগুলো৷ বলা প্রয়োজন বিভিন্ন গ্রামে স্থানীয় মোড়ল এবং মোল্লারা মিলে এসব সিদ্ধান্ত নেয়৷ এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় মেয়েদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে৷ ফলে বিভিন্ন ধরণের দোররা মারা সিদ্ধান্ত নেয় তারা৷ দোররা মারার মধ্যে বেত্রাঘাত, চাবুক, পাথর ছোঁড়া উল্লেখযোগ্য৷ কখনো চুল কেটে দেয়া হয় আবার কখনো মুখে কালি মেখে মেয়েটিকে সারা গ্রাম ঘোরানো হয়৷
গত বছর হাই কোর্ট সরকারের সমালোচনা করে এই বলে যে সরকার তার জনগণকে রক্ষা করছে না৷ বিশেষ করে অমানবিকভাবে অন্যায় এবং অত্যাচারের হাত থেকে গ্রামের অসহায় মেয়েদের রক্ষা করার ক্ষেত্রে সরকার সবসময়ই নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন