যেভাবে মানসিক রোগের শুরু
৫ নভেম্বর ২০১৫ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু আবদুল্লাহহেল ফরিদের মতে, এই বিশ্বের সবাই নাকি পাগল, কেউ কম আর কেউ বেশি৷ তবে তিনি মানসিক রোগীদের পাগল না বলে মানসিক ভারসাম্যহীন বলতেই বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন৷ রাশেদ মোশারফ মনে করেন, মানসিক রোগ হওয়ার পেছনে পারিবারিক অশান্তি ও ধমীয় শাসনের অভাব মূলত দায়ী৷ তবে মাহবুবুর রহমান দরিদ্রতাকেই মানসিক রোগের প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ফেসবুকে৷
পাঠক আবদুল্লাহেল ফরিদ আরো লিখেছেন ‘‘চিকিত্সকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে বাংলাদেশে যারা মানসিক রোগে আক্রান্ত হন, তাদের একটি অংশ আক্রান্ত হন বায়োলজিক্যাল এবং জেনেটিক কারণে৷ কিন্তু বড় একটি অংশ আক্রান্ত হন পারিবারিক এবং সামাজিক কারণে৷ নানা চাপ, দারিদ্র্য, সামাজিক এবং পারিবারিক অসঙ্গতি এর অন্যতম কারণ৷''
পাঠক নাসির উদ্দিন একটু ভিন্নভাবে দেখছেন৷ তাঁর মতে,‘‘আমরা ভাবি মানসিক রোগী মানেই পাগল৷ আসলে আমরা জানিনা কত ধরনের মানসিক রোগ আছে৷ যার কারণে অনেকে চিকিৎসা করান না বা সবার কাছ থেকে সেই সাহায্য পাননা৷ নাসির উদ্দিনের মতে, সবকিছুর আগে আগে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো দরকার৷''
আমাদের ফেসবুক বন্ধু তানভির আহমেদ এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের একটি চিকিৎসা কেন্দ্রের পরিস্থিতির কথা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমি ডয়চে ভেলেকে বাংলাদেশের একটি ডিজিটাল নির্যাতনের কথা জানাতে চাই৷ মাদকাসক্ত চিকিৎসাকেন্দ্র রিহ্যাব প্রতিষ্ঠানের কিছু নির্মমতার কথা বলছি৷ পারিবারিক কারণে একটি ছেলেকে রিহ্যাবে দিয়েছিল৷ সেই ছেলেটি রিহ্যাবে গিয়ে অন্যায়ভাবে চরম কারেন্টে শক্ এবং চরম মারধরের নির্যাতনের শিকার হয়েছিল৷ একদিন আমি নিজে ছেলেটিকে দেখতে গেলে রিহ্যাব কর্তৃপক্ষ ছেলেটি/আমার বন্ধুর সাথে দেখা করতে দেয়নি৷ তারপরে রিহ্যাব থেকে ফিরে আসা আর একটি ছেলের কাছে জানতে পারি বিনা কারণে রিহ্যাবে অনেক ছেলেকেই আটকে রেখেছে৷
ওমর ফারুক কিন্তু মানসিক রোগের কারণ হিসেবে কর্মসংস্থানের অভাব, মাদকাসক্তি, আতঙ্ক, দারিদ্র, নিরাপত্তার অভাবকেই দায়ী করেছেন৷
রেজাউল করিম বলছেন, মানসিক রোগ হওয়ার পেছনে ওপরের বিষয়গুলো কোনো না কোনোভাবে দায়ী৷
‘‘ইসলামের রীতিনীতি না মানার কারণেই নাকি মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়৷'' এই মন্তব্য আবু জাফর৷
আমাদের ফেসবুকের নিয়মিত বন্ধু জলিলুর রহমান কিন্তু মানসিক রোগের কারণ হিসেবে পুরোপুরি পরিবারকেই দায়ী করছেন৷ তিনি লিখেছেন এভাবে, ‘‘পারিবারিক সচেতনতার অভাবেই মানসিক রোগের শুরু৷ পরিবারে মা-বাবারা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে শিশুদের সামনে ঝগড়া বিবাদ করে৷ অহেতুক গালাগাল, দোষারোপ, দুর্ব্যবহার করে, যা শিশুদের ছোট মনে ছোট ছোট বিষণ্ণতার জন্ম দেয়, আর শিশুরা বড় হবার সাথে সাথে এই বিষণ্ণতা ধীরে ধীরে মানসিক চাপে পরিণত হয়৷ এই মানসিক চাপ কেউ সহ্য করতে পারে আর কেউ না পেরে হয়ে যায় রোগী৷''
মেহেদি আসিফের মতে সবাই কম বেশি এতে আক্রান্ত, কিন্তু অনেকেই নাকি তা বুঝতে পারে না৷
হাফসা বলছেন, যথেষ্ট ভালোবাসার অভাবেই মানুষ পাগল হয়৷ উইলিয়াম সুজনও হাফসার সাথে একমত৷
‘মানসিক রোগীকে পাগল বলা সামাজিক অপরাধ' জাহাঙ্গীর আলম তাঁর এই মন্তব্য সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছেন৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন