1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কিউবান বিপ্লব

আস্ট্রিড প্রাঙ্গে/এসি১৮ ডিসেম্বর ২০১৪

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁর কিউবা প্রীতির যে নিদর্শন দিয়েছেন, তা প্রায় কিউবান বিপ্লবের মতোই বিপ্লবী এবং সেই সঙ্গে বাইবেলের বাণীর মতো শান্তিপূর্ণ৷ ঠিক এমনটাই মনে করেন ডয়চে ভেলের আস্ট্রিড প্রাঙ্গে৷

https://p.dw.com/p/1E6h6
Soweto Handschlag Castro Obama Beerdigung Mandela 10.12.2013
ছবি: Chip Somodevilla/Getty Images

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁর পুরোনো বৈরি খুইয়ে বসে আছেন; কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রো তাঁর পুঁজিবাদের বিদ্বেষ খুইয়েছেন৷ ১৯৬১ সাল যাবৎ দুই দেশের দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে প্রথম টেলিফোনালাপে চটজলদি ঐকমত্য অর্জিত হয়েছে৷ ৫০ বছর ধরে সুপ্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক আবার চালু করতে চান তাঁরা, রাষ্ট্রদূত বিনিময় করতে চান৷

আর কিছুদিনের মধ্যেই ওয়াশিংটন কিউবার বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক অবরোধ তুলে নেবে, বলে ধরে নেওয়া যায়৷ বলতে কি, ‘‘অবরোধ'' কথাটা আজ শুধু রক্ষণশীল রাজনীতিকদের শব্দকোষে পাওয়া যাবে – বিশেষ করে কংগ্রেসের রিপাবলিকানরা, যাঁদের মতে অবরোধ প্রত্যাহার করাটা যুক্তরাষ্ট্রের হেরে যাওয়ার সমতুল৷

তা সত্ত্বেও অবরোধ প্রত্যাহার ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে৷ ২০০০ সাল যাবৎ কিউবায় ওষুধপত্র ছাড়া ভুট্টার দানা, খাদ্যশস্য এবং পোল্ট্রি রপ্তানি করা সম্ভব৷

‘দুষ্ট' দেশের সঙ্গে দহরম মহরম?

২০১১ সাল যাবৎ লক্ষাধিক মার্কিন নাগরিক সাংস্কৃতিক ও বিজ্ঞান সংক্রান্ত আদানপ্রদানের অঙ্গ হিসেবে কিউবা যাত্রা করেছেন৷ যে সব কিউবান যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে বসবাস করছেন, তাঁরা যা-তে কিউবায় নিজেদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, সে' সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়েছে৷ সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, উভয় দেশের সেনাবাহিনী ও উপকূলরক্ষীরা ইতিমধ্যেই সহযোগিতা করেছে, যেমন গুয়ান্তানামোতে মার্কিন ঘাঁটি সংলগ্ন সীমান্তে৷

08.05.2014 quadriga studiogast Astrid Prange
ডয়চে ভেলের আস্ট্রিড প্রাঙ্গে

ওবামা এবার সরকারিভাবে কমিউনিস্ট দ্বীপরাজ্যটির সঙ্গে একটি ‘‘নতুন অধ্যায়'' খুলতে চলেছেন এবং যে সব দেশ সন্ত্রাসবাদে মদত দেয় বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা, সেই সব ‘দুষ্ট দেশদের' তালিকা থেকে কিউবাকে বাদ দিতে চান৷ মার্কিন পর্যটকদের কিউবা যাত্রার উপর বাধানিষেধও বহুলাংশে তুলে নেওয়া হবে৷

আপাতত এর বেশি এগোনো সম্ভব নয়, কেননা ‘এমবার্গো' বা অবরোধ পুরোপুরি তুলে নেওয়ার জন্য কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন পড়বে৷ তবে এ-ও বলা প্রয়োজন যে, পদক্ষেপগুলি ছোট হলেও, সব মিলিয়ে মার্কিন-কিউবান প্রাচীরের পতন শুরু হয়েছে৷ শাস্তিমূক ব্যবস্থার প্রশমন এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অবরোধের অন্ত ঘটানোর উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হতে চলেছে৷

অবরোধকেই এতদিন দোষ দেওয়া হতো

‘‘মানসিক প্রাচীর''-টা ভেঙে ফেলা অনেকদিন আগেই ঘটা উচিত ছিল৷ অবরোধ একটি মান্ধাতার আমলের পন্থা, যা পুরোপুরি অকেজো প্রমাণিত হয়েছে৷ বরং অবরোধের সমর্থকরা যে ফলশ্রুতির আশা করছিলেন, বাস্তবে তার উল্টোটাই ঘটেছে: এই বাণিজ্যিক অবরোধ হাভানার নেতৃবর্গকে তাঁদের নিজেদের অর্থনৈতিক ব্যর্থতার একটি সহজ অজুহাত জুটিয়ে দিয়েছে৷

রাউল কাস্ত্রো বহুদিন আগেই উপলব্ধি করেন যে, শুধুমাত্র মার্কিন অবরোধের দোহাই দিয়ে কিউবার অর্থনৈতিক সমস্যাবলীর ব্যাখ্যান দেওয়া আর সম্ভব নয়৷ দেখলে মনে হবে, তিনি যেন অবরোধ তুলে নেওয়া হবে বলেই প্রত্যাশা করছিলেন৷ এ বছরের জানুয়ারি মাসেই যে মারিয়েল কনটেইনার বন্দরটি তৈরির কাজ শেষ হল, তার ব্যাখ্যাও সম্ভবত তাই৷

কিউবার বৃহত্তম অবকাঠামোগত প্রকল্পের অর্থসংস্থান করেছে ব্রাজিল৷ ব্রাজিলীয়রাও কিউবাকে তাদের ভালোবাসা জানিয়েছিল, যার ফলে রাউল কাস্ত্রো দুয়ার উন্মুক্ত করে দেন৷ যারা তাঁকে সাহায্য করে, তাদের সকলকেই ভালোবাসেন তিনি – যেমন বন্ধুদের, তেমনই বৈরিদের৷