মা ইলিশ বাঁচাতে নামলো সেনা
৫ নভেম্বর ২০১৬গোটা বিশ্বের মধ্যে ৬০ শতাংশ ইলিশই ধরা পড়ে বাংলাদেশে৷ কিন্তু জেলেরা নির্বিচারে ধরায় ইলিশের আধার ক্রমশ ছোট হতে শুরু করে, যার প্রভাব পড়ে নিম্নবিত্ত বাঙালির উপর৷ দাম যাচ্ছিল বেড়ে, ফলে ইলিশের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল গরিবরা৷
হাসিনা সরকার এই অবস্থা পরিবর্তনে ইলিশ ধরায় বেশ কড়াকড়ি আরোপ করেছে৷ গত ১২ অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে৷ কেননা এই সময়ে যে ডিম ছাড়ে মা ইলিশ৷ তাই ইলিশ ধরা চলবে না কিছুতেই৷
অবশ্য এমন নিষেধাজ্ঞা আগেও জারি হয়েছিল৷ কিন্তু কাজ তেমন হয়নি নিষেধাজ্ঞা পালনে কড়াকড়ি না থাকায়৷ এবার তাই সাত হাজার বর্গকিলোমিটার জলসীমায় টহল দিয়েছে সেনাবাহিনী৷
ইলিশ বাঁচাতে সেনা নামানোর দরকারটা এককথায় বুঝিয়ে দিলেন ইকবাল হোসেন৷ সরকারের মৎস বিভাগের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘একটা মা ইলিশ বছরে বিশ লাখ ডিম ছাড়ে৷ এবার হিসেব করুন, তাদের বাঁচাতে পারলে উৎপাদন কোথায় পৌঁছাবে৷''
ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে তাই দিনরাত টহল দিয়েছে সেনাবাহিনী৷ সাইফুলের কথায়, কারফিউ জারি হয়েছে নদীতে৷
লেখাবাহুল্য, বাঙালির কাছে সবচেয়ে বেশি কদর ইলিশের৷ শুধু বাংলাদেশের ১৬ কোটি নয়, পশ্চিমবঙ্গের নয় কোটি বাঙালিরও উৎসব-পার্বণে পাতে চাই ইলিশ৷ ইলিশ রক্ষার সাম্প্রতিক উদ্যোগকে তাই রীতিমত যুদ্ধ হিসেবে আখ্যা দিলেন মাছ রক্ষার এক আন্দোলনের কর্মী জাহিদ হাবিব৷ তাঁর কথায়, মা ইলিশদের রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে৷
গত কয়েকবছর ধরেই অবশ্য বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে বাংলাদেশ৷ এবার তা বাস্তবায়নে কঠোর হয়েছে সরকার৷ এছাড়া পাঁচ বছর আগে প্রতিবেশী দেশ ভারতে সুস্বাদু এই মাছ রপ্তানিও নিষিদ্ধ করেছে মুসলিমপ্রধান দেশটির সরকার৷
সমালোচকরা অবশ্য বলছেন, ইলিশ বাঁচানোর এই কড়াকড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মাঝিরা৷ তবে হোসেন সে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন৷ মাছ ধরা নিষিদ্ধের সময়টাতে নাকি ৩২ হাজার জেলেকে বিনামূল্যে চাল দিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ তাই তাদের আর্থিক ক্ষতি কিছুটা হলেও তা পুষিয়ে দেয়া হয়েছে বলেই দাবি তাঁর৷
এআই/ডিজি (এএফপি, এপি)