মিশরের বন্ধু, মিশরের ‘আসল শত্রু’ যুক্তরাষ্ট্র
১১ জুলাই ২০১৩মিশরে এখন চলছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রী পরিষদ গঠনের তোড়জোর৷ নতুন প্রধানমন্ত্রী হাসেম এল বেবলাউয়ির জন্য এটাই প্রথম এবং সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ৷ মিশরের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুরসি সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপে ক্ষমতাচ্যুত হবার পর থেকে তাঁর দল মুসলিম ব্রাদারহুড নেমেছে সহিংশ বিক্ষোভে৷ দলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের যে প্রক্রিয়া চলছে তাতে তাদের সমর্থনের কোনো প্রশ্নই ওঠেনা, কেননা, তারা মনে করে, এই সরকার সামরিক অভ্যুত্থানের উপহার৷ অন্যদিকে মুরসি বিরোধী উদারপন্থী দলগুলোর অংশ গ্রহণও যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হচ্ছে বেবলাউয়িকে৷ তাঁর আগে এল বারাদেইকে প্রধানমন্ত্রী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল৷ সমালোচনার মুখে সেই উদ্যোগ থেকে সরে আসতে হয়৷ অবশ্য এমন অভিজ্ঞতা এড়ানোর উদ্দশ্যে সতর্কতা অবলম্বন করলেও মন্ত্রী পরিষদ গঠনে বেশি সময় নেবেন না বেবলাউয়ি৷ আগামী সপ্তাহের মধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রী পরিষদ চূড়ান্ত হওয়ার কথা৷
তারপরও যে মিশর সংকটের আবর্তে ঘুরপাক খাবে তাতে সন্দেহ নেই৷ মুরসি বিরোধীরা শুক্রবারও বিক্ষোভ মিছিল করবে৷ অন্যদিকে মুরসি বিরোধী আন্দোলনে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা উদারপন্থী তরুণদের সংগঠন ‘তামারুদ' নামবে পবিত্র রমজান মাসকে স্বাগত জানানোর আনন্দ মিছিলে৷ আদর্শগতভাবে দু'পক্ষ পরস্পরের চরম বিরোধী৷ কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রশ্নে তাঁদের মত অভিন্ন৷ মুসলিম ব্রাদারহুড মনে করে, ওবামা সরকারের পরোক্ষ মদতেই মুরসিকে সরিয়েছে মিশরের সেনাবাহিনী৷ আর আরব অঞ্চলের সবচেয়ে জনবহুল দেশটির উদারপন্থী দলগুলো মনে করে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট হয়ে ক্ষমতায় থাকার সময় যথেচ্ছচারিতার কদর্য উদাহরণ রেখেছেন মোহামেদ মুরসি৷ বৃহস্পতিবারও তাহরির স্কয়ারে দাঁড়িয়ে এক তরুণ বলছিলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র্র মিশরের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ব্রাদারহুডের সঙ্গে আঁতাত করেছিল৷ এখন দেখুন, রাস্তায় আমাদের সঙ্গে লড়ছে ব্রাদারহুড৷ ওরা লড়ছে আবার ক্ষমতায় ফেরার জন্যে৷ যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু বসে আছে নিরাপদ দূরত্বে৷''
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিশরের সম্পর্কে কোনো পরিবর্তন আসেনি৷ যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী কোনো দেশে সামরিক অভ্যুত্থান হলে সে দেশে সব রকমের সাহায্য বন্ধ হয়ে যায়৷ কিন্তু মিশরের বেলায় তেমনটি হচ্ছে না৷ মিশরের সেনাবাহিনীকে বছরে যে ১৩০ কোটি ডলার দেয়া হয়ে থাকে তা বন্ধ করার কোনো ইঙ্গিত দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র৷ বরং জানানো হয়েছে, আগের অঙ্গীকার অনুযায়ী আগামী আগস্টেই চারটি এফ-সিক্সটিন বিমান দেবে বারাক ওবামার সরকার৷
এসিবি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)