ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল হুমকির মুখে
২ জুন ২০১০বন কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর কর এতদিন পরে প্রশ্ন করলেন, কোথায় সেই সংস্কারকৃত বনাঞ্চল?
রাজ্যের বন এবং পরিবেশ বিভাগ পরিচালিত ৬৭২ বর্গ কিলোমিটার ভিতরকনিকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের সঙ্গে তুলনা করেই হয়তো এই প্রশ্ন করেছেন চন্দ্র শেখর কর৷ তিনি বলেন, গুল্ম, ফার্ন এবং তালজাতীয় গাছ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল থেকে ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে৷ বনাঞ্চলের আশেপাশে কিছু গ্রাম রয়েছে৷ প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষ ভিতরকনিকা অভয়ারন্যের কাছাকাছি বসবাস করে৷
ভারতের চারটি প্রধান ম্যানগ্রোভের মধ্যে ভিতরকনিকা অভয়ারন্য সবচেয়ে ছোট৷ পরিবেশ সমীক্ষা অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত এই অভয়ারণ্যেই সবচেয়ে বেশি জীব বৈচিত্র রয়েছে৷ ভারতের বন বিভাগ এবং একই ধরনের একটি সংস্থা এই সমীক্ষাটি চালিয়েছিল৷
বন বিভাগের মতে, এই ম্যানগ্রোভের ৭০ রকমের গাছ, লতা, গুল্মের মধ্যে ৫৮টিই ভারতের সব জায়গাতে পাওয়া যায়৷ এরমধ্যে ৫৫টি পাওয়া যায় ওড়িষ্যাতেই৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উরিষ্যার ম্যানগ্রোভ বিশেষ করে, ভিতরকনিকা এলাকার এই ম্যানগ্রোভ প্রচন্ড মানবিক চাপের মধ্যে থাকে৷ আর এর কারণ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি৷ এবং বিশাল এলাকা জুড়ে মানবিক কর্মকান্ড৷
২০০৯ সালে ভারতের স্টেট অব ফরেস্ট -এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এই ম্যানগ্রোভটি, দেশটির মোট ম্যানগ্রোভের শতকরা পাঁচ শতাংশ বলে ধরা হয়৷ ৪ হাজার, ৬'শ ৩৯ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে এর বিস্তৃতি৷ ভিতরকনিকা অভারণ্যের কাছে হাতিয়াগান্দা গ্রাম৷ সেই গ্রামেরই একজন সুশান্ত মাইতি৷ তিনি বলেন, লোকজন এখনও এই ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল থেকে কাঠ কেটে নিয়ে যায়৷
এদিকে বন কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর কর বলেছেন, গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে ১৪ কিলোগ্রাম কাঠ প্রতিদিন রান্নার জন্যে ব্যবহৃত হয়৷ যার মধ্যে ১২ কিলোগ্রামই আসে এই ম্যানগ্রোভ থেকে৷ অবৈধ কাঠ নিয়ে যাওয়ার বিনিময়ে লোকজনের কাছ থেকে পাঁচ থেকে দশ রুপি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বনাঞ্চলের রক্ষী মাইতির বিরুদ্ধে৷
প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা
সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার