যে কারণে মহাকাশে এখনো রাশিয়া-পশ্চিমা ঐক্য
১৭ অক্টোবর ২০২২
২৫ বছর ধরে মহাকাশে গবেষণা করছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র (আইএসএস)৷ এই সময়ে একবারও রাশিয়া কেন যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে- এমন প্রশ্ন ওঠেনি৷ তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিমা দেশগুলো যেখানে ভ্লাদিমির পুটিনের দেশকে এমনকি ক্রীড়াঙ্গন থেকেও দূরে রাখছে, ঠিক তখন আইএসএস-এ ‘দুই পক্ষের' এক হয়ে কাজ করার বিষয়টি অনেকের কাছে বিপুল বিস্ময়ের বৈকি!
রুশ মহাকাশচারি আনা কিকিনা এখন মহাকাশের পথে৷ গত ২০ বছরে প্রথম রুশ মহাকাশচারি হিসেবে আইএসএস-এ যোগ দিতে চলেছেন তিনি৷ রাশিয়া যখন কিয়েভে হামলা তীব্রতর করেছে, পুটিন গ্যাস নেয়ার সুযোগ দিলে ইউরোপের দেশগুলো যখন সায় দিচ্ছে না, তখন কিকিনা কিনা রাশিয়া আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের বন্ধুত্বের নিদর্শন হয়ে যোগ দিচ্ছেন আইএসএস-এ!
কেন আইএসএস-এ এখনো রাশিয়া এবং পশ্চিমা দেশগুলো পাশাপাশি?
আইএসএস-এর মডিউলটি গড়ে উঠেছে মূলত দুটি অংশ নিয়ে৷ এর একটি অংশ তৈরি করেছে রাশিয়া আর অন্যটি তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷ রাশিয়ার তৈরি করা অংশটি পরিচালনা করে রাশিয়া৷ সেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি করা অংশটি পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্র৷ ফলে পশ্চিমা দেশগুলো এ মুহূর্তে কার্যত রাশিয়ার সঙ্গে মিলে কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য৷
আরেকটি কারণেও আইএসএস থাকলে সেখানে রাশিয়াও থাকবে৷
মহাকাশকেন্দ্রটি যে কক্ষপথে থেকে খুব দ্রুত বিশ্বের চারিদিকে ঘুরছে তার মূল কৃতিত্ব কিন্তু রাশিয়ার৷ আইএসএস সেকেন্ডে প্রায় আট কিলোমিটার (পাঁচ মাইল) বেগে, অর্থাৎ ৯ মিলিমিটারের এক বুলেটের চেয়ে ২০ গুণেরও বেশি বেগে ছুটছে৷ এমনিতে ভেসে থাকার জন্য এই গতি যথেষ্ট৷ তবে কখনো কখনো হঠাৎ করেই উচ্চতা কমতে থাকে আর তখন আইএসএস-কে পৃথিবী থেকে ৪০০ কিলোমিটার উঁচুতে রাখতে গতি অনেকাটা বাড়িয়ে দিতে হয়৷ ওই অতিরিক্ত গতিটা আসে রাশিয়ার তৈরি মডিউল থেকে৷
রাশিয়া যেতে চায়, যুক্তরাষ্ট্র চায় না
গত জুলাইয়ে রসকসমস-এর প্রেসিডেন্ট ইউরি বরিসভ জানিয়েছিলেন, নিজেদের মহাকাশকেন্দ্র উদ্বোধন করার জন্য রাশিয়া ২০২৪ সালের মধ্যে আইএসএস থেকে সরে আসতে চায়৷ কিন্তু নাসার প্রশাসক বিল নেলসন জানিয়েছেন, রুশ কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে এমন কোনো সিদ্ধান্তের কথা এখনো তাদের জানায়নি৷ তবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি সিএইচআইপিএস বা চিপস আইন স্বাক্ষর করেছেন৷ চিপস-এর বিবরণ অনুযায়ী, ২০৩০ সাল পর্যন্ত আইএসএস-এর সঙ্গে কাজ করবে নাসা৷
এস্তেবান পার্দো/ এসিবি