রমনি-রায়ান জোট
১৪ আগস্ট ২০১২আর মাত্র তিন মাসেরও কম সময়৷ আগামী ৬ নভেম্বর মার্কিন ভোটাররা সিদ্ধান্ত নেবেন হোয়াইট হাউজে এবার কে পা রাখবেন৷ বর্তমান প্রেসিডেন্ট ওবামাই থাকবেন, নাকি নতুন কেউ সেখানে আসবেন৷ ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রচারণা শুরু হয়ে গেছে ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান শিবিরের পক্ষ থেকে৷ ডেমোক্র্যাট শিবিরের প্রার্থী বারাক ওবামা আর জো বাইডেন৷ অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী মিট রমনির সঙ্গে কে আসেন -- সেটা দেখার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন তাঁর সমর্থকরা৷ এবার রমনি তাঁদের বেশ চমকে দিয়েছেন বলতে হয়৷ মাত্র ৪২ বছর বয়সী উইসকন্সিন রাজ্যের কংগ্রেসম্যান পল রায়ানকে রানিং মেট হিসেবে বাছাই করেছেন তিনি৷ উইসকন্সিনের রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছেন সুবক্তা রায়ান৷ এমনকি প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা পর্যন্ত তাঁর সমর্থকদের সামনে পল রায়ানের প্রশংসা করলেন৷ এই সময় তিনি বলেন, ‘‘আমি কংগ্রেসম্যান রায়ানকে অভিনন্দন জানাচ্ছি৷ আমি তাঁকে চিনি এবং এই নির্বাচনীয় প্রচারণায় তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছি৷ কংগ্রেসম্যান রায়ান একজন ভালো মানুষ এবং পরিবার ঘনিষ্ঠ৷ তিনি গভর্নর রমনির লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যের একজন চমৎকার মুখপাত্র৷''
তবে রমনির এই রানিং মেটের নীতি নিয়ে স্পষ্টতই দ্বিমত রয়েছে ডেমোক্র্যাট শিবিরের৷ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বর্তমানে যে টানাটানি চলছে তা থেকে উত্তরণের জন্য পল রায়ান চান শিক্ষা, গবেষণার পাশাপাশি অবকাঠামো নির্মাণে সরকারি ব্যয় অনেক কমিয়ে আনা হোক৷ আবার একই সঙ্গে তিনি বিত্তশালীদের করের পরিমাণ শতকরা দুইভাগ কমানোরও কথা বলছেন৷ তাঁর এই নীতি নিয়ে স্বাভাবিকভাবে দ্বিমত পোষণ করলেন ওবামা৷ নির্বাচনীয় প্রচারণাকালে এই নিয়ে তার ভাষ্য হলো, ‘‘এই পরিকল্পনা বাজেট ঘাটতি কমানোর জন্য নয়, নয় নতুন কর্মসংস্থানেরও৷ এটা মধ্যবিত্তদের উন্নতির কোনো পরিকল্পনা নয়, নয় অর্থনীতিকেও সামনে এগিয়ে যাওয়ার৷ আমার মত, কারোর কর কমানোর কোনো প্রয়োজন নেই৷ বরং প্রয়োজন খেটে খাওয়া সেসব অ্যামেরিকানদের কর থেকে মুক্তি দেওয়া, যারা পরিশ্রম করে যাচ্ছে তাদের বাচ্চাগুলোকে মানুষ করার জন্য, তাদের মাথার ওপর একটি ছাদ দেওয়ার জন্য৷''
পল রায়ানের আগমন অবশ্য নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে রিপাবলিকান শিবিরে৷ এতদিন ধরে মিট রমনি জনপ্রিয়তার সমীক্ষাগুলোতে প্রেসিডেন্ট ওবামার চেয়ে পিছিয়ে ছিলেন৷ কেবল অ্যামেরিকার সোনালী দিন পুনরুদ্ধারের কথা বলে তো আর ভোটারদের সাড়া পাওয়া যায় না! তাই রায়ানের মতো প্রার্থী, যিনি ডেমোক্র্যাট শিবিরের অর্থনৈতিক নীতির বিকল্প প্রস্তাব দিতে পারবেন, তাঁকেই বাছাই করলেন মিট রমনি৷ এরপর ‘চয়েস', এই নতুন শব্দ রায়ান তুলে ধরলেন ভোটারদের সামনে, ‘‘আপনাদের জন্য আমাদের দুটি চয়েস রয়েছে, যেটা ভবিষ্যতের জন্য৷ হয় আমরা এখন যে রাস্তায় আছি তাতেই থাকবো, নতুবা আমরা পরিবর্তন আনবো এবং দেশকে সঠিক পথে ফিরিয়ে নিয়ে যাবো৷''
মিট রমনির সঙ্গে পল রায়ানের জোটকে ডেমোক্র্যাটরাও সমীহের চোখে দেখছে৷ ওবামা শিবিরের বিশেষজ্ঞরাও এখন নতুন করে হিসেব কষতে শুরু করেছেন৷ রায়ান চান মার্কিন জনগণ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সরকারের বাড়তি নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে আনতে৷ এবং এই পথ ধরে তিনি মার্কিন অর্থনীতিকে আবারও জীবিত করার মন্ত্র জপছেন এখন ভোটারদের কানে৷
প্রতিবেদন: জিল্কে হাসেলমান / আরআই
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ