1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাংবিধানিক আদালত

১৬ সেপ্টেম্বর ২০১২

কার্লসরুয়ের সাংবিধানিক আদালত আইন প্রণয়ন করে না, অনুমোদন করে না, শুধু বিচার করে দেখে, তা সংবিধান সম্মত কিনা৷ কিন্তু সেই ভূমিকাই জার্মানির সংবিধানে নির্দিষ্ট এই প্রতিষ্ঠানটিকে অসাধারণ গুরুত্ব এবং কর্তৃত্ব এনে দিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/169uE
President of the German Constitutional Court (Bundesverfassungsgericht ) Andreas Vosskuhle (5th L) announces the ruling on the European Stability Mechanism (ESM) and the fiscal pact at the court in Karlsruhe September 12, 2012. Germany's Constitutional Court said on Wednesday the country can ratify the euro zone's new rescue fund and budget pact as long it can guarantee there will be no increase in German financial exposure to the bailout fund without parliament's approval. Ruling that an injunction against the ESM and fiscal compact was largely unfounded, the court said one condition for allowing ratification was that any increase in German liability beyond 190 billion euros must first be approved by the Bundestag lower house of parliament. REUTERS/Kai Pfaffenbach (GERMANY - Tags: BUSINESS POLITICS CRIME LAW)
ছবি: Reuters

গত বুধবার কার্লসরুয়ের আদালতকক্ষে আটজন রক্তিম জোব্বাধারী বিচারক রায় দিলেন, জার্মানি ইএসএম অর্থাৎ নতুন ইউরো ত্রাণ তহবিলে তার অনুদান দিতে পারবে এবং পূর্ণাঙ্গ দায় নিতে পারবে৷ তবে সেটা ইএসএম'এর আয়তন ১৯০ বিলিয়ন ইউরো ছাড়ানো না পর্যন্ত৷ ইএসএম ঐ অঙ্ক ছাড়ালে, জার্মান সরকারকে উত্তরোত্তর দায় নেবার আগে জার্মান সংসদের অনুমতি নিতে হবে৷

রায় শোনালেন সাংবিধানিক আদালতের প্রধান বিচারক আন্দ্রেয়াস ফসকুলে৷ সে খবর সাথে সাথে পৌঁছে গেল স্ট্রাসবুর্গে ইউরোপীয় সংসদে৷ সেখানে তখন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন উদারপন্থী সংসদীয় গোষ্ঠীর প্রধান গি ফেরহোফস্টাট৷ শুভ খবর, বললেন তিনি, কিন্তু সঙ্গে যোগ করলেন:

‘‘জার্মান সাংবিধানিক আদালতের কথা উঠলেই আমি একটু সমালোচনামূলক হয়ে পড়ি, যেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশগুলোতে আর কোনো সাংবিধানিক আদালত নেই৷ ভবিষ্যতে হয়তো আমরা সেগুলোকেও কার্লসরুয়ের মতোই গুরুত্ব দিতে পারব৷''

ইউরোপীয় সংসদে পরিবেশবাদী সবুজ সংসদীয় গোষ্ঠীর যুগ্ম-সভাপতি ডানিয়েল কোন-বেন্ডিট তার কিছু পরেই মন্তব্য করেন:

‘‘রাজনীতি হল বিভিন্ন দেশের সংসদের কাজ৷ আমরা যদি বেশি বেশি আদালতে যেতে শুরু করি, তাহলে ব্যাপারটা বিশেষজ্ঞদের হাতে চলে যাবে৷ রাজনীতিকে আদালতের ব্যাপার করে তোলার অর্থ, রাজনীতিকে ধীরে ধীরে বিদায় দেওয়া৷''

The Russian Constitutional Court's assembly hall in St.Petersburg on 11.10.2011. Verfassungsgericht Gebäude Sankt Petersburg Russland Juli 2012 eingest.
সাংবিধানিক আদালতছবি: picture-alliance/dpa

বলতে কি, কার্লসরুয়ের সাংবিধানিক আদালতকে নিয়ে অ্যালার্জি আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল আইএমএফ'এর প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দ'এরও হতে দেখা গেছে৷ কয়েক সপ্তাহ আগেই লাগার্দ'কে বলতে শোনা যায়, ‘‘আর একবার যদি ‘কার্লসরুয়ে' কথাটা শুনি, তাহলে আমি হল ছেড়ে বেরিয়ে যাব৷'' ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৃহত্তম দেশ জার্মানি ইউরো ত্রাণ তহবিল ইএসএম'এ অর্থ দেবে কিনা, দিলেও কতোটা দেবে, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে জার্মান সরকার নয়, সংসদ নয়, কার্লসরুয়ের একটি আদালত, এটি ফ্রান্সের বাসিন্দা লাগার্দের পক্ষে কতোটা বোধগম্য কিংবা গ্রহণযোগ্য, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা করা যেতে পারে৷

কিন্তু জার্মান রাজনীতি এবং রাজনীতিকদের সেই ১৯৫১ সাল থেকেই কার্লসরুয়ে'কে নিয়ে ঘর করতে হচ্ছে৷ একমাত্র রক্ষা, কেউ কোনো প্রশ্ন কিংবা অভিযোগ নিয়ে সাংবিধানিক আদালতের কাছে না গেলে, আদালতের কিছুই করার থাকে না৷ কিন্তু একবার কোনো বিষয় কার্লসরুয়ে'তে পৌঁছলে, কি জার্মান সরকার, কি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কি ন্যাটো, সকলকেই কার্লসরুয়ের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে৷ সেখানেই সকলের রাগ৷

আদালত দু'টি সেনেটে বিভক্ত৷ প্রত্যেক সেনেটে আটজন করে বিচারক থাকেন৷ সংসদের দুই কক্ষ মিলে এই বিচারকদের নির্বাচন করে৷ বিচারকরা ১২ বছরের জন্য নির্বাচিত হন, যা কিনা সংসদের তিনটি কর্মকালের সমান৷ ভৌগোলিক বিচারেও কার্লসরুয়ে বার্লিন থেকে দূরে এবং স্বতন্ত্র৷ এ'সবই করা হয়েছে যা'তে সাংবিধানিক আদালতের বিচারকরা সব রকম প্রভাব থেকে দূরে থেকে তাঁদের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন৷ দ্বিতীয় সেনেটের প্রধান আন্দ্রেয়াস ফসকুলে সম্প্রতি তাঁর কর্মস্থানকে একটি খ্রিষ্টীয় মঠের সঙ্গে তুলনা করেছেন৷

কার্লসরুয়ের বিচারকদের কথার উপরে আর কারো কথা চলে না৷ তাঁরা সরকারের প্রণীত আইন বাতিল করে দিতে পারেন৷ এমনকি সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় গৃহীত সিদ্ধান্তও বাতিল করতে পারে কার্লসরুয়ে৷ আবার সংসদও কার্লসরুয়ের কাছে জানতে চাইতে পারে, কোনো আইন সংবিধানের সঙ্গে মিলছে কিনা৷ বিচারকরা রাজ্য এবং ফেডারাল সরকারের মধ্যে আইনের বয়ান সংক্রান্ত বিরোধের নিষ্পত্তি ঘটাতে পারেন৷ তাঁরা নির্বাচনের ঠিক-বেঠিক বিচার করতে পারেন, এমনকি - সরকারের আবেদনে - কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে পারেন৷ আবার একক নাগরিকরাও কার্লসরুয়ের আদালতে আবেদন জানাতে পারে৷ ইউরো ত্রাণ তহবিল সংক্রান্ত অভিযোগে এবার স্বাক্ষর করেছিলেন ৩৭,০০০ নাগরিক৷

ফসকুলে সম্প্রতি বলেছেন, কার্লসরুয়ে আসলে রাজনীতির খেলার রেফারি, কোনো বাড়তি প্লেয়ার নয়৷ কার্লসরুয়ে লাল কার্ড দেখাতে পারে, কিন্তু কী করে গোল করতে হয়, সরকারকে সেটা বলে দিতে পারে না৷ মুশকিল এই যে, কার্লসরুয়ের প্রতিটি সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতিকদের উপর তার প্রভাব এবং জনমানসে তার প্রতিপত্তি বেড়ে চলেছে৷

প্রতিবেদন: কাই-আলেক্সান্ডার শলৎস/এসি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য