রাশিয়ার তেল: অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা
৯ মার্চ ২০২২রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক লড়াই আরো তীব্র করলো অ্যামেরিকা ও যুক্তরাজ্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন জানিয়েছেন, রাশিয়া থেকে তারা অশোধিত তেলও গ্যাস নেবেন না। রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে অ্যামেরিকা। বাইডেন বলেছেন, এভাবে অ্যামেরিকার মানুষ পুটিনকে আরেকটি বড় ধাক্কা দিলেন।
যুক্তরাজ্যও ঘোষণা করেছে, ২০২২-এর মধ্যেই তারা পর্যায়ক্রমে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমিয়ে এনে একেবারে বন্ধ করে দেবে। ইতিমধ্যেই যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংস্থা শেল জানিয়ে দিয়েছে, তারা আর রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের প্রভাব রাশিয়ার উপর ভয়ংকরভাবে পড়বে। নিষেধাজ্ঞার ফলে তাদের অর্থনীতি প্রবল চাপে পড়বে।
অ্যামেরিকা বিদেশ থেকে যে অশোধিত তেল ও পরিশোধিত পণ্য আমদানি করে, তার আট শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে। আর যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে এই পরিমাণটা হলো ছয় শতাংশ।
ইইউ-র প্রতিক্রিয়া
তবে অ্যামেরিকা ও যুক্তরাজ্য এই ঘোষণা দিলেও ইইউ এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। কারণ, জার্মানি সহ ইউরোপের অনেক দেশই রাশিয়ার গ্যাসের উপর নির্ভরশীল। ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের উপর নির্ভরশীলতা ২০৩০-এর আগেই শেষ করে দেবে। তারা অন্য দেশ থেকে তেল-গ্যাস আনার চেষ্টা করছে। তাছাড়া দ্রুত বিকল্প শক্তির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়াবার চেষ্টা করছে।
রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া
রাশিয়া জানিয়েছে, তারাও কয়েকটি দেশে কিছু কাঁচা মাল ও পরিশোধিত পণ্য পাঠানো বন্ধ করে দেবে। তবে কী কী পণ্য পাঠানো তারা বন্ধ করবে সেই তালিকা এখনো দেয়া হয়নি। তেল-গ্যাস ছাড়াও রাশিয়া থেকে পশ্চিমা দেশগুলি দানাশষ্য ও মাংস কেনে।
রাশিয়া আগেই হুমকি দিয়েছে, তাদের উপর তেল ও গ্যাস নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে ব্যারেলপ্রতি তিনশ ডলার হবে। তার ধাক্কা বিশ্বের প্রতিটি দেশের উপর এসে পড়বে। তাছাড়া তারা জার্মানিকেও গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে।
জেলেনস্কির বক্তব্য
অ্যামেরিকা ও যুক্তরাজ্যের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, এটা একটা খুবই শক্তিশালী বার্তা। এখন যা পরিস্থিতি হলো, তাতে রাশিয়াকে হয় আন্তর্জাতিক আইন মানতে হবে, যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে, নাহলে তাদের হাতে কোনো অর্থ থাকবে না। জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়াকে দেয়া প্রতিটি সেন্ট বুলেট বা অস্ত্র বানাতে খরচ হয়। সেই অস্ত্র অন্য সার্বভৌম দেশের উপর আছড়ে পড়ে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আলোচনার মধ্যে দিয়ে লড়াই বন্ধ করতে হবে।
দাম বাড়ছে
রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার ফলে শুধু যে মস্কো চাপে পড়েছে তাই নয়, অ্যামেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলিতেও তার প্রভাব পড়ছে। সব জায়গায় পেট্রো পণ্যের দাম বেড়েছে। তার প্রভাব সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের উপর পড়েছে। প্রায় সব দেশেই জিনিসের দাম কমবেশি বাড়ছে।
জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)