রাশিয়ার তেল-গ্যাস বন্ধ করতে ইইউ বৈঠক
৩ মে ২০২২এতদিন ধরে জার্মানি এই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে ছিল না। কারণ, রাশিয়ার গ্যাস ও তেলের উপর জার্মানি অনেকটাই নির্ভরশীল। কিন্তু সম্প্রতি জার্মানি তাদের মনোভাব বদল করে জানিয়েছে, ইইউ যদি এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তাহলে তাদের আপত্তি নেই। তারপরই ব্রাসেলসে ইইউ-র এনার্জি বা শক্তি মন্ত্রীরা সোমবার থেকে আলোচনায় বসেছেন।
মস্কো ইতিমধ্যে পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় তেল ও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেছে। ইইউ-র দেশগুলির মনোভাব হলো, রাশিয়ার এই ব্ল্যাকমেল তারা মেনে নেবে না। তবে সবচেয়ে বড় নীতিপরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে জার্মানি। তারা জানিয়ে দিয়েছে, যদি অবিলম্বে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তাহলে তারা আর বিরোধিতা করবে না।
ইইউ-র ২৭টি দেশ কমবেশি রাশিয়ার তেল, গ্যাস ও কয়লার উপর নির্ভরশীল। ইইউ তাদের চাহিদার ২৬ শতাংশ তেল ও ৪০ শতাংশ গ্যাস রাশিয়া থেকে আমদানি করে। জার্মানি সহ অনেক দেশই রাশিয়ার গ্যাসের উপর খুব বেশি নির্ভরশীল।
ইউক্রেন অবশ্য বেশ কিছুদিন ধরে ইইউ-র সমালোচনায় মুখর। তারা জানিয়েছে, রাশিয়া যখন হামলা করেছে, তখন ইইউ প্রতিদিন রাশিয়া থেকে কয়লা, তেল, গ্যাস কিনছে এবং তাদের শয়ে শয়ে কোটি ইউরো দিচ্ছে। এটা ঠিক নয়।
ক্রেমলিন গত সপ্তাহে পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়াতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, যে সব দেশ বন্ধু নয়, তাদের রুবলে তেল ও গ্যাসের দাম দিতে হবে। তারা আর ইউরোতে দাম মেটাতে পারবে না। মস্কো জানিয়েছে, ডলার ও ইউরো দিতে হলে গাজপ্রোমের একটি ব্যাংকে দিতে হবে। সেখান থেকে তারা আরেকটি ব্যাংকে তা ট্রান্সফার করবে এবং তা রুবলে পরিবর্তিত করবে।
ইইউ এভাবে অর্থ দেয়া ও দুইটি দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা নিয়ে রাশিয়ার কাছে ব্যাখ্যা চাইতে পারে। সোমবার ইইউ জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে এখন যে নিষেধাজ্ঞা জারি আছে, সেটা মানা হলে মস্কোকে ওইভাবে অর্থ দেয়া সম্ভব নয়।
ইইউ-র বেশ কিছু দেশ মনে করে, রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক। তাহলে রশিয়া বড় ধাক্কা খাবে। কিন্তু অনেক দেশ এটাও মনে করছে, এই সিদ্ধান্ত নিলে তার বড় প্রভাব ইইউ-র উপরও এসে পড়বে। ইইউ-কেও সেই ধাক্কা সামলাতে হবে।
জার্মান ভাইস-চ্যান্সেলার হাবেক বলেছেন, রাশিয়ার তেল-গ্যাসের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে জার্মানির অর্থনীতিতে তার একটা বড় প্রভাব পড়বে। তাও তারা ব্রাসেলসে যে সিদ্ধান্ত হবে, তা মেনে নিতে রাজি।
তবে স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরির সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক খুবই ভালো। তারা জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়ার উপর তেল-গ্যাস-কয়লা নিয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা তারা মানবে না। সূত্র জানাচ্ছে, ইইউ যদি রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারিও করে, তাহলে হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়াকে ছাড় দেয়া হতে পারে।
জিএইচ/এসজি (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)