1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাশিয়ার ভ্যাকসিন: আগে ঘোষণা, পরে পরীক্ষা

২১ আগস্ট ২০২০

করোনার ভ্যাকসিন তৈরির ঘোষণা করার পর রাশিয়া এ বার তার মাস টেস্ট বা গণহারে পরীক্ষার পথে যাচ্ছে। অন্যদিকে ভারতও রাশিয়ার পথ নিতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

https://p.dw.com/p/3hHNL
ছবি: picture-alliance/dpa/AP/A. Zemlianichenko

সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন ঘোষণা করেছিলেন, তাঁরাই প্রথম করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলেছেন। নাম স্পুটনিক ফাইভ। তাঁর মেয়ে এই ভ্যাকসিন নিয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন পুটিন। রাশিয়ার এই দাবি নিয়ে বিশ্বে কম জলঘোলা হয়নি। প্রশ্ন উঠেছিল, রাশিয়া কি ক্লিনিকাল ট্রায়াল ঠিকমতো করেছে? বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা রাশিয়ার দাবি মানতে চাননি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও জানিয়েছিল, তারা এই ভ্যাকসিনের সুরক্ষার বিষয়টি কড়াভাবে খতিয়ে দেখে তারপর ছাড়পত্র দেবে।

ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কৃতিত্ব দাবি করার পর এ বার রাশিয়া জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকে ভ্যাকসিনের গণহারে পরীক্ষা হবে। তখন লাখো স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে এই ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়াল হবে। ভ্যাকসিন তৈরির অর্থ দিচ্ছে রাশিয়ার সভরেন ওয়েলথ ফান্ড। তারা বলেছে, আগামী সপ্তাহে ৪০ হাজার লোককে পরীক্ষামূলকভাবে ভ্যাকসিন দেয়া হবে।

ভারতও কি রাশিয়ার পথ অনুসরণ করছে? সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল সায়েন্সেস(আইসিএমআর)-এর ডিজি বলরাম ভার্গভ সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটিকে বলেছেন, ভারতে দুইটি ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হতে চলেছে। এরপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় বা চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ হতে অন্তত পক্ষে ৬ থেকে ৯ মাস সময় লাগে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্র দিতে পারে। বৈঠকে উপস্থিত এক সাংসদ পিটিআই-কে এই খবর দিয়েছেন।

এরপরই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, তা হলে পুটিনের পথেই হাঁটবেন মোদী? এই আশঙ্কার কারণ, এর আগে ১৫ অগাস্টের মধ্যে ভ্যাকসিন বের করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল আইসিএমআর। তখন অভিযোগ উঠেছিল, প্রধানমন্ত্রী মোদী স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে ভ্যাকসিন তৈরির ঘোষণা করতে চান বলেই এই তাড়াহুড়ো। কিন্তু প্রবল সমালোচনার পর আইসিএমআর জানিয়ে দেয়, তারা এই ধরনের কোনো চরমসীমা দেয়নি। তারা শুধু বলেছেন, করোনার প্রতিষেধক তৈরির কাজ যেন কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতার মধ্যে না পড়ে। তাতে অযথা দেরি হবে।

ঘটনা হলো তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল পরীক্ষা সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ভারত সহ বিভিন্ন দেশে প্রচুর লোককে দেয়া হয়েছে। ওই ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা চলছে। এই পরীক্ষা না করে প্রতিষেধক বাজারে আনা রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন চিকিৎসা-বিজ্ঞানীরা। সে জন্যই রাশিয়ার প্রতিষেধক নিয়ে এত সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ভারতও যদি একই পথ নেয়, তা হলে তাদেরও একই সমালোচনার মুখে পড়তে হবে। তাই ভার্গভের কথা জানাজানি হওয়ার পর  বিভিন্ন মহলে আশঙ্কা ছড়িয়েছে।

রাশিয়া আবার তাদের ভ্যাকসিন উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলতে চায়। রাশিয়ার ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ বলেছেন, ‘‘আমাদের মতে, যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমেই ভ্যাকসিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।''

জিএইচ/এসজি(এএফপি, রয়টার্স, পিটিআই)